সদস্য:MS Sakib/Sandbox
::::::::শ্রীশ্রীকৃষ্ণায় নমো নমঃ।
- পদ॥
- নমো নারায়ণ নিরঞ্জন জগজীব।
- পুরাণ পুরুষ হৃষীকেশ সদাশিব॥
- দানব দলন দামোদর আদি দেব।
- দণ্ডবতে পরি কেশবক করো সেব॥ ১
- কৃষ্ণ পাদপদ্ম যুগ হৃদয়ত ধরি।
- গুরুর চরণ মনে শিরোগত করি॥
- মার্কণ্ডেয় পুরাণর কথাতে প্রধান।
- পুয়ারে রচিবো হরিশ্চন্দ্র উপাখ্যান॥ ২
- জয় জয় হরিশ্চন্দ্র নৃপতি তিলক।
- রাজসূয় যজ্ঞ যজি ত্রিদশ দেবক॥
- সশরীরে স্বর্গে গৈলা সমস্ত নগরে।
- কৃষ্ণর চরণে পদ ভণিলা শঙ্করে॥ ৩
- বিষ্ণু বৈষ্ণবর কথা দুয়ো সমতুল।
- শ্রবণ কীর্তনে করে পাপর নির্ম্মূল॥
- চণ্ডাল পর্য্যন্ত করে সবাকে পবিত্র।
- জানি নিরন্তরে শুনা বৈষ্ণব চরিত্র॥ ৪
- জৈমুনি বদতি শুনা ধর্ম্ম পক্ষি বর্গ।
- কোন কর্ম্ম করি হরিশ্চন্দ্র গৈলা স্বর্গ॥
- কি কারণে কদর্থিলা বিশ্বামিত্র ঋষি।
- কহিয়োক কথা মোত পরম হরিষি॥ ৫
- পক্ষিগণ বদতি শুনিয়ো ঋষিবর।
- পৃথিবীতে সারোত্বর অযোধ্যা নগর॥
- সংসারত যত গুণ গণ অলঙ্কৃত।
- সর্ব্বক্ষণে যৈত জনার্দ্দন উপস্থিত॥ ৬
- নির্ম্মিলা প্রবন্ধে বিধি পুরি বিতোপন।
- স্বর্গতো অধিক সুখী যার প্রজাগণ॥
- নিজ ধর্ম্মশালী শিষ্ট বৈষ্ণব সকলে।
- ঘরে ঘরে প্রত্যকে অচলা লক্ষ্মী জলে॥ ৭
- সেহি নগরত ভৈলা হরিশ্চন্দ্র রাজা।
- পুত্রতো অধিক দশ গুণে পালে প্রজা॥
- সন্ত মহন্তক ক্ষমাবন্ত সত্যবন্ত।
- বিষ্ণুর ভকত মহাধর্ম্ম আচরন্ত॥ ৮
- অস্ত্র শস্ত্র সমস্ত শাস্ত্রতে সুশিক্ষিত।
- বুদ্ধি বৃহস্পতি সম প্রতাপে আদিত্য॥
- কন্দর্প সদৃশ শোভে সুন্দর পরীর।
- সর্ব্বগুণে গুণান্বীত সাগর গম্ভীর॥ ৯
- নাহিকে লোকর শোক যাহার রাজ্যত।
- নাহি মারি মরক দুর্ভিক্ষ দুঃখ যত॥
- নাহিকে সচলে চোর ঘোর বিঘ্ন ভয়।
- আকালত নাহি কারো মরণত ভয়॥ ১০
- কর্ম্ম পথে থাপিলন্ত পৃথিবী মণ্ডল।
- রায় বান্দী সম কিছু নাহি বলাবল॥
- মহাসুখে প্রজা যেন বৈকুণ্ঠত বাসে।
- স্বর্গ মর্ত্তে পাতাল ব্যাপিল যার যশে॥ ১১
- পৃথিবীর রাজ্য গণে যাক বলে নাতে।
- কর দিয়া রাজাগণে ভৃত্যবতে খাটে॥
- জল সাগরক লাগি ভৈলা অধিকার।
- সাতোদ্বীপা পৃথিবীর লবে কর ভার॥ ১২
- হীরা মরকত মণি মাণিক অপার।
- পর্ব্বত সমান দৌল বান্ধিলা ভাণ্ডার॥
- সুবর্ণ রজত যত তাক কোনে লেখে।
- যেহিভিতি চক্ষু চাবে রত্নময় দেখে॥ ১৩
- লক্ষ কোটি শকটে শকতে ধন বহে।
- ধনভরে তল যাই অযোধ্যা নসহে॥
- জগতর লক্ষ্মী সবে ভৈল এক ঠাই।
- শ্রীমন্ত হরিশ্চন্দ্র রাজা ইন্দ্র প্রায়॥ ১৪
- এক চত্রে ভূঞ্জে অকণ্টকা বসুন্ধরি।
- শৈব্যা নামে ভৈলা তান প্রিয়া পটেশ্বরী॥
- স্ত্রীরত্ন মাজে লেখি গুণবতী সখী।
- পত্নী পার্ব্বতী পতিব্রতা পূণ্যবতী॥ ১৫
- পতি প্রাণ পতি জ্ঞান পতিকেসে ধ্যান।
- পতি ব্যতিরেক স্বপ্ননতো নাহি আন॥
- নৃপতির প্রাণতো অধিক আতি স্নেহ।
- যেন গৌরী-শঙ্করে অভিন্ন ভৈল দেহ॥ ১৬
- স্বর্গত ক্রীড়ন্তে যেন শচী পুরন্দর।
- লক্ষ্মী সমন্নিতে যেন কেলি কেশবর॥
- শৈব্যা ভার্য্যা সমে হরিশ্চন্দ্র মহারথ।
- পুরিলন্ত নৃপতির সবে মনোরথ॥ ১৭
- রোহিতাশ্ব নামে ভৈল তনয় রাজার।
- যেন পূর্ণিমার চন্দ্র শিশু সুকুমার॥
- সর্ব্ব সুলক্ষণ একো গুণে নাহী হীন।
- নিরন্তর আছে নৃপতির যত চিন॥ ১৮
- এহিমতে আনন্দে কতোদিন গৈল।
- যজ্ঞ করিবাক নৃপতির মনভৈল॥
- পূরোহিত বশিষ্ঠক অনাইলা মতাই।
- বোলন্ত মিনতি করি হরিশ্চন্দ্র রাই॥ ১৯
- তযু আশীর্ব্বাদ সুপ্রসাদে ভুঞ্জোরাজ।
- ইন্দ্রতো অধিক দেখো আমার সমাজ॥
- উপার্জ্জিত ধনরত্ন যিসে রক্ষা হুই।
- করায়োক মোক মহা যজ্ঞ রাজসূয়ী॥ ২০
- সুবর্ণ রজত রত্ন যত ধন ধান।
- করিয়ো সাম্ফল ব্রাহ্মণক দিবো দান॥
- তোমার প্রসাদে যজ্ঞ সিজোক সম্পতি।
- ইটো সূর্য্য বংশর তুমিসে গুরু গতি॥ ২১
- শুনি রঙ্গে ঋষিরাজে মাতিলন্ত পাছে।
- যত লাগে সম্ভার গৃহতে সব আছে॥
- ত্রৈলোক্যত কোন কর্ম্ম তোমার অসাধ্য।
- সত্বরে অনায়ো বাচি রাজা এক লক্ষ॥ ২২
- বশিষ্ঠে কহিলা যত যজ্ঞর বিধান।
- হাঙ্কারে আনিলা রাজা লক্ষেক প্রমাণ॥
- যেন যোগ্য আনি সমুচিতে কর দিল।
- হরিশ্চন্দ্র মহারাজা যজ্ঞ আরম্ভিল॥ ২৩
- সমস্ত সম্ভার মিলাইলন্ত মহারাজ।
- অসংখ্যাত ঋষিগণ মিলাইলা সমাজ॥
- বশিষ্ঠে মণ্ডল দিয়া আরম্ভিলা পূজা।
- ভার্য্যায়ে সহিতে কুশহস্ত ভৈলা রাজা॥ ২৪
- প্রথমে বোলন্ত পূজিয়োক গণপতি।
- রাজায়ে বোলন্ত গুরু কমন যুগুতি॥
- পরম পুরুষ হরি তাঙ্ক এঢ়ি আগে।
- কিবা গুণে গণেশক পূজিবাক লাগে॥ ২৫
- জগতর নাথ সংসারর আদি মূল।
- বিষ্ণুক পূজিবো প্রথমতে দিয়া ফুল॥
- বিষ্ণুত অর্পিবো যত পূজা যজ্ঞ দান।
- বিষ্ণু ব্যতিরেক দেব নজানোহো আন॥ ২৬
- হরি তুষ্ট ভৈল তুষ্টে হোবে চরাচর।
- হেন বিষ্ণু এড়ি পূজিবোহো লম্বোদর॥
- কাচক যতনে যেন পরিহরি হীরা।
- শালগ্রাম মাটীতে নটিক দেয় পীরা॥ ২৭
- বশিষ্ট বদতি শুনা নৃপতি প্রধান।
- গণেশক কিসক করোহো এতমান॥
- নৃপতি বোলন্ত গুরু নুবুলিবা মোক।
- মাধবক আরাধিলে যেন লাগে হোক॥ ২৮
- বিঘ্নর শঙ্কায়ে নুপুজিবো হৃষীকেশ।
- ওকনিক ভয়ে কোনে মুণ্ডি আছে কেশ॥
- বশিষ্ঠে লৈলন্ত আনো ঋষিত সম্মনি।
- গণেশক এড়ি পূজিলন্ত লক্ষ্মীপতি॥ ২৯
- অনেক নৈবেদ্য বলী বস্তু উপহারে।
- মাধবক পূজিলন্ত বিবিধ প্রকারে॥
- স্তুতি নতি ভকতি করিলা বহুভাবে।
- যাবত শকতি পূজিলন্ত কৃষ্ণ পাবে॥ ৩০
- অনেক আহুতি করি বহ্নি বিসর্জ্জিল।
- প্রণতি পূর্ব্বকে আদিত্যক অর্ঘ্য দিল॥
- বশিষ্ঠকো দিলা আনি দক্ষিণা অশেষ।
- হয় হস্তী রথ দাস-দাসী গ্রাম্য দেশ॥ ৩১
- অসংখ্যাত রথ রথি গাবে অলঙ্কার।
- ভাণ্ডারে ভাণ্ডারে দিলা সুবর্ণ অপার॥
- আনো ঋষিগণ যত আসন্ত সমাজে।
- ভিন্নে ভিন্নে সবাকো অর্চ্চিলা মহারাজে॥ ৩২
- পার্ব্বতীর পুত্র যত বিঘ্নির ঈশ্বর।
- তাঁহান ক্রোধত কার্য্য হৈব অথান্তর॥
- দিলা পুষ্প চন্দন বসন অলঙ্কার।
- গাবে গাবে সুবর্ণর একোশত ভার॥ ৩৩
- হরিশ্চন্দ্র নৃপতির রাজসূয় শুনি।
- অযোধ্যাক আসি সবে ভরিলা ব্রাহ্মণী॥
- অশেষ সেবকে দেই ভোজন সম্ভৃত।
- দধি মধু মোদক ভুজন্ত পঞ্চামৃত॥ ৩৪
- ঘৃত লাডু পরমান্ন ভুঞ্জি গণ্ডগোল।
- ঘন ক্ষীর খান্তে যেন পেট ভৈল ধোল॥
- তথাপি বোলন্ত মোক আরু কিছু লাগে।
- উপছি পাত্রত থাকে তথাপিতো মাগে॥ ৩৫
- কতো পঞ্চামৃত খুজিলন্ত খাইবো বুলি।
- মুখত নযাই চাই থাকে হাত তুলি॥
- বিধিক সুমরি কর্ম্ম করন্ত ব্রাহ্মণ।
- এড়িয়ো নেরন্ত যেন কৃপণর ধন॥ ৩৬
- খাহন্তে খাহন্তে কতো পাইলে গল মান।
- বস্তু আনি চাতন্ত নেদন্ত সমিধান॥
- থিয় দিয়া থাকৈ বান্তি আসিবাক ভরে।
- যেন মঠ ধরি যোগীগণে ধ্যান করে। ৩৭
- এহিমতে ভুজন্তে ব্রাহ্মণ লক্ষ কোটি।
- মনত সন্তোষ পঞ্চামৃত নেই যুতি॥
- অসংখ্যাত লোকে তাসম্বার ধরে আল।
- স্বর্গতো লাগিল ব্রহ্মা ভোজন ঘঞ্চাল॥ ৩৮
- নৃপতি বোলন্ত ঋষি মোর বোল করা।
- সমস্ত ভণ্ডারে দিলো নিয়ামত পারা॥
- শুনি দ্বিজগণে ভৈলা পরম সন্তোষ।
- ভণ্ডার সোমায়া লগাইলন্ত লুরি লোস॥ ৩৯
- একৈক ভণ্ডারে রত্ন লক্ষ কোটি মোণ।
- আথে বেথে দম করি চপাবে ব্রহ্মাণ॥
- ওপরত পরি তাক মোর মোর বুলি।
- আপোন ইচ্ছায়ে ওপচান্ত ধরি জুলি॥ ৪০
- বান্ধন্ত ভোকোন্দা কতো গুটি সুবর্ণর।
- মুকুতা মাণিক মণি হীরা বাখরর॥
- বোঝা লৈয়া তথাপি করন্ত হাঁই-ফুঁই।
- তাকোনিবে নপারিয়া যান্ত কুজা হুই॥ ৪১
- মুণ্ডফুটে বুলিয়া পেলান্ত কতো বোঝা।
- নাকে খর উষাশ তানয় হুই কুজা॥
- হা বিধি কিনো মোর দরিদ্রর চিন।
- রাজসূয় যজ্ঞতল গৈল শুজা ঋণ॥ ৪২
- রথত তুলিলা কতো আঙ্কোবালী ধরি।
- গৃহত করন্ত বাজ কেঙ্কা জোঙ্কা করি॥
- তুলি লৈবে নপারিয়া লৈযান্ত ঘসাই।
- শরীরর বস্ত্র কাঢ়ি ডোলক লগাই॥ ৪৩
- গোটে গোটে পেড়া কতো ধরন্ত সাবতি।
- আনে ওচরক যান্তে লাগে হতা হতি॥
- দেন্ত উকি পুত্র ভ্রাতৃ যার নামি কাঢ়ি।
- আলগাই নেন্ত পাছে সাত পাঞ্চ বেঢ়ি॥ ৪৪
- সুবর্ণর ঝারি খুরি আছে লক্ষ কোটি।
- তাক দেখি কতো ব্রাহ্মণর আতি মুতি॥
- জোট করি বান্ধে ওপরর বস্ত্র কাঢ়ি।
- দুই হাতে লৈ যান্ত কান্ধত কতো আরি॥ ৪৫
- তথাপি করন্ত যান্তে মনত বিকল।
- মোর কি নভৈল হস্তী গোট মান বল॥
- আজি লৈয়া গৈলো হন্তে ভণ্ডার উলাশী।
- শতেক পুরুষ সুখে খাইলো হন্তে বসি॥ ৪৬
- কতোদ্বিজগণে কঙ্কালত বস্ত্র কাছি।
- রূপে ওপছায়া মাথে লৈয়া যান্ত পাছি॥
- আন্দোল করিয়া চলি যান্ত বোঝা শিরে।
- দলদোপ বসুমতি ব্রাহ্মণর ভীরে॥ ৪৭
- জোটা জোটে আশেষ দ্বিজ নিরন্তর।
- চিরঞ্জীব হৌক হরিশ্চন্দ্র নৃপবর॥
- যাহার যজ্ঞক ত্রৈলোক্যতো নাহি সরি।
- অদরিদ্র ভৈল দুঃখী ভিক্ষী দেশান্তরি॥ ৪৮
- অন্যথানে কোনে এনে ব্রাহ্মণক দিব।
- হরিশ্চন্দ্র সম দাতা নাহি নুপজিব॥
- রাখিলা কিরিটি যাবে চন্দ্র দিবাকর।
- এহি কথা মতে সবে চলি যান্ত ঘর॥ ৪৯
- রাজার সহস্র কোটি ভণ্ডার অনেক।
- ন পারিলা নিবে শত ভাগরো ভাগেক।
- আনো যত প্রজা যজ্ঞশালে আছে আসি।
- দিলা বস্ত্র অলঙ্কার বহু ধন রাশি॥ ৫০
- রাজসূয় যজ্ঞে তুষ্ট ভৈলা চরাচর।
- ত্রিদশে সহিত আসিলন্ত পুরন্দর॥
- স্বর্গতো বসিয়া প্রসংশন্ত দেবগণ।
- ধন্য ধন্য হরিশ্চন্দ্র সাম্ফল জীবন॥ ৫১
- পাতালতো যশ বাখানন্ত দৈত্য নাগে।
- কিনো মহা যজ্ঞ করিলন্ত মহা ভাগে॥
- নভৈলন্ত নোপজিব চৈধ্য ভূবনত।
- সাম্ফল জন্মিল রাজা মাতৃর গর্ভত॥ ৫২
- পক্ষিগণ বদতি জৈমুনি শুনিয়োক।
- যজ্ঞত নভৈল তুষ্ট নাহি হেন লোক॥
- বিঘ্নির ঈশ্বর একে গণেশত বাজে।
- পূজা নপাই গণপতি অধোমুখে লাজে॥ ৫৩
- থাক থাক কৈক যাইবি রাজা অহঙ্কারী।
- আর মান সাধো বুলি মোচরন্ত ডারি॥
- মান্য খণ্ডি মোক তই নোপূজিলি আগে।
- তার প্রতিফল দিবো নচারিবে লাগে। ৫৪
- এহি গুণি গণেশর মনে সুখ নাই।
- পাছে পাছে রাজার ফুরন্ত চিদ্র চাই॥
- নৃপতিও আপোনার পুরি মনোরথ।
- বিষ্ণুক চিন্তিয়া সুখে রহিলা রাজ্যত॥ ৫৫
- শুনিয়োক সভাসদ যত নিরন্তর।
- পরমার্থ কথা মার্কেণ্ডেয় পুরাণর॥
- হরিশ্চন্দ্র রাজার চরিত্র অনুপাম।
- পাপর নির্য্যাণ হোক বোলা রাম রাম॥ ৫৬
- ছবি
- ধর্ম্ম পক্ষিগণে বোলে শুনিয়ো জৈমুনি ঋষি
- যেন কথা ভৈলা তাত পাছে।
- এহি মতে হরি পৃথিবীমণ্ডলে ইন্দ্র
- মহাকৃতকৃত্য হুয়া আছে॥
- কৃষ্ণর প্রসাদে নৃপ ভূঞ্জিলন্ত সাতোদ্বীপ
- ধর্ম্ম দেহা চুইলে হরে পাপ।
- হেন নাহি একো নরে পাপত কুচ্ছা করে
- সাক্ষাতে প্রজার মাব বাপ। ৫৭
- লোকর একান্ত মতি করন্ত ভকতি নতি
- রাজরেসে চিন্তৈ হিতকার্য্য।
- দেবতা মাগন্ত বর হরিশ্চন্দ্র নরেশ্বর
- যুগে যুগে করন্তোক রাজ॥
- শৈব্যা পটেশ্বরী যার স্ত্রীরত্ন মাজে সার
- যেন লক্ষ্মী কৃষ্ণর ওচর।
- গুণত যে হেন বিধি যেহি বাঞ্চে সেহি সিদ্ধি
- ভোগে যেন দুতি পুরন্দর॥ ৫৮
- এহি মতে অযোধ্যাত আছাযেবে নরনাথ
- দিনেক মন্ত্রীক আদেশিলা।
- মৃগ মারিবার কাজে যাইবো বিজু বন মাজে
- আনা সৈন্য নকরি গাফিলা॥
- রাজার আদেশ পালি উঠি মন্ত্রী গাব চালি
- হাঙ্কারি আনিলা সামরাজ।
- অনন্তরে নরেশ্বর হস্তে ধরি ধনু শর
- যাত্রা করি আসি ভৈলা রাজ॥ ৫৯
- আরোহিলা দিব্য রথে ধরিলা বনর পথ
- অলক্ষ নৃপতি সেবা করে।
- কতোহো চামরে ধুলি কতো শ্বেত ছত্র তুলি
- মাথার উপর করি ধরে॥
- অসংখ্যাত সেনাগণে অস্ত্র শস্ত্র তেতিক্ষণে
- যোগান ধরিয়া আগে পাছে।
- বাবে নানা বাদ্য ভাণ্ড চতুর্দ্দোলে ছত্রদণ্ড
- তুলি ধরি সৈন্যগণ কাছে॥ ৬০
- অংসখ্য সহস্র রথ চলি যাই রাজপথ
- ধ্বজ দণ্ড গগণ বিয়াপি।
- চতুরঙ্গ সেনা বলে যুরি সবে জলে থলে
- চলে এক যুপ করি ব্যাপী॥
- লক্ষকোটি গজ বাজী চলি যাই এক লাঞ্জি
- গজ ঘণ্টা শবদ আম্ফাল।
- চিহরে অসংখ্য ঘোরে প্রচণ্ড প্রজার গিরে
- ঘনে ঘনে যাই ভূমি চাল॥ ৬১
- এহি মতে মহারাজ চলি যান্ত বন মাজ
- দেখিলন্ত বিমঙ্গল সেতু।
- সর্প আহি বাজ ভৈলা দক্ষিণে শৃগাল গৈলা
- আগত পরিলে ধূমকেতু॥
- ফন্দে বাম কর ঊরু অনা বায়ু ভাগে তরু
- পর্ব্বত শিখর পরে খসি।
- সঘনে নির্ঘাত পরৈ ঘনে ঘনে ভূমি লরৈ
- এক আকাশত দুই শশী॥ ৬২
- দেখি মন্দ অভিপ্রায় মনত উৎসাহ নাই
- তথাপি বিপাকে নেই টানি।
- এহি মতে মহা ভাগ অরণ্যক পাইলা লাগ
- আদেশিলা মৃগ মারা হানি॥
- শুনি সবে সেনাগণে পশি সেহি ঘোর বনে
- খেদি মারে হরিণা বরাহ।
- কতো কতো জাল পাতি শাল দাঙ দিয়া অতি
- কতো করৈ অরণ্যক দাহ॥ ৬৩
- নৃপতিয়ো রথ এড়ি এক তেজি ঘোড়ে চড়ি
- পশিলন্ত সেহি বন মাজ।
- হাতে ধরি ধনুর্ব্বাণ দেখিলন্ত বিদ্যমান
- আগে উপসন্ন মৃগরাজ॥
- দেখি রাজা সেহি চেগে শরে বিন্ধিলন্ত বেগে
- সিয়ো অন্তরিয়া মৃগবর।
- জীব ভয়ে তেতিক্ষণে বিজুলি চমকে যেন
- বায়ু বেগে দিলেক লবর॥ ৬৪
- রাজায়ো ঘোড়াত উঠি পাছত দিলন্ত ছুটী
- খেদি যাই হাতে পাই পাই।
- যত রথ বাজী গজ কেহো নপাইলেক লাগ
- একেশ্বরে গৈলা মহারাই॥
- হরিশ্চন্দ্র রাজ্যশ্বর যান্ত যেবে বহুদূর
- মনুষ্যর শুনিলা শবদ।
- রিণি রিণি শুনি ধ্বনি চাইলে রাজা মনে গুণি
- স্ত্রীগণে করে আর্ত্তানাদ॥ ৬৫
- কিবা মায়া রাক্ষসর কিবা দৈত্য দানবর
- কিবা একো দেবতার চলে।
- যিহোক সিহোক ভাগে তথাপি যাইবাক লাগে
- কোনে করে স্ত্রীক দুর্ব্বল॥
- সমস্ত পৃথিবী মোর আত কোন খণ্ট চোর
- যমত ঘেলাবে আসি গাব।
- এহি বুলি মহারাই মৃগ এড়ি যান্ত ধাই
- যথাতে শুনন্ত আর্ত্তরাব॥ ৬৬
- নমো নমো নারায়ণ বিঘিনি খণ্ডন প্রভু
- ভকত জনক করা দয়া।
- হরি পদ প্রসাদত সিদ্ধি হৌক অভিমত
- নাশ যাউক সংসারর মায়া॥
- কৃষ্ণর চরণ সেবি রচিলন্ত পদ ছবি
- কেশবর কিঙ্কর শঙ্করে।
- শুনিয়োক নর লোক কলিত সদ্গতি হোক
- হরি হরি বোলে নিরন্তরে॥ ৬৭
- পদ
- হরি হরি বোলে নিরন্তরে॥ ৬৭
- পক্ষিগণ বদতি শুনিয়ো মহামুনি।
- খেদি যান্ত রাজা যেবে আর্ত্তনাদ শুনি॥
- সেহি বেলা মনে আলোচন্ত বিঘ্নিরাজ।
- পাইলো সন্ধি আবে মোর সিদ্ধি ভৈল কাজ॥ ৬৮
- তপে দীপ্তমান বিশ্বামিত্র মহা ঋষি।
- মহাবিদ্যা সাধন্ত নির্জ্জন বনে বসি॥
- ব্রহ্মারো অসাধ্য ইটো বিদ্যা মনে গমি।
- ধরিলন্ত মহাব্রত ক্রোধক নিয়মি॥ ৬৯
- সহিবে নপারি তার তেজক প্রভাব।
- স্ত্রীরূপে বিদ্যাগণে করে আর্ত্তরাব॥
- নজানিলে খেদি যান্ত নৃপতি অবোধ।
- আর নিন্দা বাণী শুনি উঠি গৈলা ক্রোধ॥ ৭০
- মোক অপমানে লগাই আছে দুরাচার।
- এহি সময়তে আজি সাধো প্রতিকার॥
- ঋষির হাতত কর রাজ্যর উচ্ছেদ।
- তেবেসে খণ্ডিবে মোর হৃদয়ের খেদ॥ ৭১
- এহিমতে গুণি পাছে দেবতা গণেশ।
- নৃপতির শরীরত ভৈলন্ত প্রবেশ॥
- রাজার উঠিলা আতি দশ গুণে কোপ।
- রথত করন্তে যান্ত অনেক আতোপ॥ ৭২
- মোহোর রাজ্যত কোনে চিন্তে অপকার।
- কোন পাপীষ্ঠর আবে কট কটাই ঘার॥
- দুহিবাক লাগি কোনে বাঘিনীক চান্দৈ।
- মরিবার ঔষধী গলত তুলি বান্ধৈ॥ ৭৩
- হেন মন্দ কর্ম্ম করে কোননো অধমে।
- আমাক জোঙ্কাবৈ আসি মলচিল যমে॥
- গড়ল কিসক ভুঞ্জে মরিবাক লাই।
- আজি ঘোর শরে যমপুরে দিবো ঠাই॥ ৭৪
- স্ত্রীক দুর্ব্বল করে কোননো নিস্খলে।
- জলন্ত বহ্নিক বান্ধে বস্ত্রর অঞ্চলে॥
- খানিতেক রহ আজি ছেদকরো শির।
- মোর ঘোর শরে পীবে তপত রুধির॥ ৭৫
- অনেক গর্জ্জন্তে যান্ত রাজা মহাবলী।
- শুনি বিশ্বামিত্র আতি ক্রোধে গৈলা জ্বলি॥
- এরিলন্ত যত মৌন ব্রতর বিধান।
- চিদ্রপাই যত বিদ্যা ভৈল অন্তর্দ্ধান॥ ৭৬
- পাছে বিশ্বামিত্রক দেখিলা নরনাথ।
- দশন কামুরি ঋষি ঋঙ্কারন্ত মাথ॥
- মহা ক্রোধে জ্বলে দেহা যেন অগ্নি পঞ্চ।
- আরকত চক্ষুক ফুরান্ত যেন গুঞ্জ॥ ৭৭
- শরীরর পরাগোটে বহি যাই ঘর্ম্ম।
- চাহান নজাই যেন কালন্তক যম॥
- থাক থাক বুলি দিলে আঙ্গুলি নিচান।
- দেখি নৃপতির ভৈল অন্তরীক্ষ প্রাণ॥ ৭৮
- আথে বেথে ঘোড়ার নামিল নরোত্তম।
- ওষ্ঠ কণ্ঠ শুখাইল মুখত নাহি পম॥
- অছারিয়া পেলাইল হাতর শর ধনু।
- মহাভয়ে প্রবেশিল থির নুহি তনু॥ ৭৯
- কাম্পে হাত পাব সবে শরীর তরাসে।
- যেন অশ্বত্থর পত্র পছোবা বতাসে॥
- দণ্ডবতে পড়ি রাজা করন্ত কাতর।
- নজানিয়া তোমাকে বুলিলো অনুত্তর॥ ৮০
- আর্ত্তনাদ শুনিলো স্ত্রীর বনত।
- কোনোবা দুর্ব্বল করে মোহোর মনত॥
- সিকারণে খেদি আইলো ধরি শর চাপ।
- দিয়োক অভয় ক্ষমা করা ঋষি বাপ॥ ৮১
- রাজা ভৈলে এহিসে আমার নিজ কাম।
- শর ধনু ধরি ধর্ম্মে করিবো সংগ্রাম॥
- দিবো মহা দান রক্ষা করিবো প্রজাক।
- এহিসে কারণে শ্রেষ্ঠ সৃজিলা আমাক॥ ৮২
- ঋষিয়ে বোলন্ত রাজা শুনিয়ো অবোধ।
- কোনে এবে করিবে বনত আবে যুদ্ধ॥
- কাহাক রাখিবে লাগে কাক দিবি দান।
- জান যেবে অতি শীঘ্রে দেহ সমিধান॥ ৮৩
- রাজা বোলে বুঢ়া ব্রাহ্মণক দিবো দান।
- ভয়াতুর প্রাণীক করিবো পরিত্রাণ॥
- শত্রু সমন্বিতে ন্যায় করিবো সংগ্রাম।
- স্বরূপত কহিলো ক্রোধ করা উপশাম॥ ৮৪
- হেন শুনি বিশ্বামিত্র দিলা সমিধান।
- স্বরূপত যেবে ব্রাহ্মণক দেহ দান॥
- মইতো ব্রাহ্মণ তেবে তোর চিনা জনা।
- জান্তে মোক রাজসূইর দিয়োক দক্ষিণা॥ ৮৫
- হেন শুনি নৃপতির নামি আইল ধাতু।
- রঙ্গমনে বোলন্ত রক্ষার ভৈল হেতু॥
- দানক মাগন্ত ঋষি আমাক নশাপি।
- এরাইলো প্রমাদ উপজিলো পুনরপি॥ ৮৬
- উলতিয়া স্বর্গ যেন পাইলা আনন্দত।
- করযোড়ে বিনাবন্ত ঋষির আগত॥
- তোমাক দিবাক পাইবো কত পুণ্যভাগে।
- সত্বরে বুলিয়ো মোত কিবা দান লাগে॥ ৮৭
- কিবা রত্ন রজতর অলক্ষ ভণ্ডার।
- কিবা রাজদণ্ডপাত লক্ষ্মী অলঙ্কার॥
- কিবা গজ বাজী আরু অযোধ্যা নগর।
- কিবা লাগে দেও আপোনার কলেবর॥ ৮৮
- আছে মহাশান্তি শৈব্যা প্রিয়া পটেশ্বরী।
- রোহিতাস্য পুত্র মোর প্রাণ এড়ি সরি॥
- যদি ঋষি খোজা মোত তাক দিবো দান।
- নুহি তেবে বোলাদিবো আপোনার প্রাণ॥ ৮৯
- পাইলা হেন জানি কিছু নাহি আত শঙ্কা।
- বিস্তর বোলন্ত আরু কয়ো যত টঙ্কা॥
- যেহি মন বাঞ্চা তাক খোজা বিশ্বামিত্র।
- নিস্তে নিস্তে দিবো তাক নাহি কিছু চিত্র॥ ৯০
- হেন শুনি রঙ্গ ভৈলা ঋষির মনত।
- আউর কৈক যাস রাজা মোহোর হাতত॥
- অনন্তরে নৃপতিক দিলা সমিধান।
- যতেক যাচিলে তাক পাইলো হেন জান॥ ৯১
- কিন্তু রাজসূয়র দক্ষিণা দিয়া আগে।
- পাছে দান খোজি লৈবো মোক যিবা লাগে॥
- প্রথমতে যজ্ঞর দক্ষিণা আছো খুজি।
- যেন লাগে দিয়োক আপোন মন বুজি॥ ৯২
- নৃপতি বোলন্ত দক্ষিণাক দিবো পাছে।
- আগে দান লৈয়ো মনে যেন ইচ্ছা আছে॥
- হেন শুনি ঋষিয়ে বোলন্ত ভাল ভাল।
- যেবে দান দিবা মোক শুনা মহীপাল॥ ৯৩
- সসাগরা পৃথিবীর যত অধিকার।
- গজ বাজী প্রজা যত রত্নর ভণ্ডার॥
- গ্রাম্য দেশ পর্ব্বত যতেক বন স্থলি।
- সমস্তে দিয়োক মোক প্রতিজ্ঞা সাম্ফলি॥ ৯৪
- বিস্তর বাক্যত রাজা নাহি মোর কাজ।
- পুত্র ভার্য্যা সমন্বিতে তুমি মাত্র রাজ॥
- নোখোজোহো পুণ্যক থাকোক তোর ভাগে।
- আন যত সর্ব্বস্ব সকলে মোক লাগে॥ ৯৫
- ধর্ম্ম পক্ষিগণে বোলে শুনিয়ো জৈমুনি।
- করিলন্ত হাস্য হরিশ্চন্দ্র হেন শুনি॥
- সার্থক আর্জ্জিলো রাজ্য ভার ধন ধান।
- তুমি হেন ঋষিক স্বহস্তে দিবো দান॥ ৯৬
- অসার সংসার জ্ঞানী লোকে হেন কহে।
- যিবা দেই যিবা খাই সেইমাত্র রহে॥
- অথির শরীর ক্ষণিকতে হোবে চন্ন।
- ইসে সারোত্তর নিরন্তরে দান পুণ্য॥ ৯৭
- কহি গৈল দিলিপ সাগর ভগীরথ।
- কহি গৈলা বলী আদি পৃথু মহারথ॥
- মই হেন নৃপতি কতেক ভৈল ঠাই।
- অসার পৃথিবী কারো লগত নযাই॥ ৯৮
- আপুনি করিবো আজি আক পরিত্যাগ।
- মহাদান পুণ্য মৃত্যু ভৈলে দেই লাগ॥
- এহি বুলি হাতে লৈয়া তিল কুশ জল।
- দিলো ঋষি সসাগরা পৃথিবী মণ্ডল॥ ৯৯
- একেবারে বোলা মোর যত অধিকার।
- আজি ধরি ভৈল সবে সর্ব্বস্ব তোমার॥
- হরিষ বদনে রাজা বুলি এহি বাণী।
- ঋষির হাতত উৎসর্গিয়া দিলা পানী॥ ১০০
- বিশ্বামিত্র বোলন্ত সমস্ত পাইলো দান।
- পৃথিবী আমার ভৈল গোখোজ প্রমাণ॥
- যেবে তই অকপটে দিলি মহারাই।
- গুচি মোর রাজ্যর অন্যত্র লৈয়ো ঠাই॥ ১০১
- তোক লাগে পাইলে মোক নমানিবে প্রজা।
- কৈত শুনিয়াছ এক পাটে দুই রাজা॥
- আপোনার পুত্র পত্নী লৈয়া মহারাজ।
- কেবল শরীরে এতিক্ষণে হোবা বাজ॥ ১০২
- নৃপতি বোলন্ত ঋষি যাউক নগর।
- তুমি আজি ভৈলা অভিনব নরেশ্বর॥
- শিরত ধরিবো আজি তোমার আদেশ।
- পুত্র ভার্য্যা সহিতে ত্যজিবো আজি দেশ॥ ১০৩
- এহি হৌক বুলি ঋষি চালিলন্ত গাব।
- পাচত নৃপতি চলিযান্ত ভূমি পাব॥
- গুছিল প্রতাপ রাজা শ্রীভৈল হীন।
- বাঘর আগত যেন শঙ্কিত হরিণ॥ ১০৪
- কতোক্ষণে আসি অরণ্যর ভৈলা বাজ।
- নৃপতিক দেখি লাগ লৈলা সামরাজ॥
- চতুর্ভিতি বেঢ়ি আসি ধরিলা যোগান।
- সবাকো মাতিয়া রাজা দিলা সমিধান॥ ১০৫
- আজি ধরি আমার নাহিকে অধিকার।
- ত্যজিয়া ঋষিক দিলো যত রাজ্য ভার॥
- ঋষিত করিয়ো সেবা মোত এড়ি আশ।
- রাজ্যক চাড়িয়া আজি করিবো প্রবাস॥ ১০৬
- কর্ম্ম যেন ভৈলা মোক নপারিবা গালি।
- সর্ব্বক্ষণে থাকিবা ঋষির আজ্ঞা পালি॥
- রোহিতাস্য পুত্র মই সৈব্যা পটেশ্বরী।
- এহি তিনি জনে আজি ভৈলো দেশান্তরী॥ ১০৭
- শুনিয়োক পুণ্য কথা যত সভাসদ।
- একতিলে দেখা কেন ভৈল রাজপদ॥
- পরম চঞ্চল ধন জন সবে জানি।
- আর আশা এড়ি ডাকি বোলা রাম বাণী॥ ১০৮
- দুলড়ী
- এতেক বচন শুনায়া সেনাক
- নিশবদ ভৈল রাজা।
- হেন অথন্তর কথা শুনি সবে
- তবধ ভৈলন্ত প্রজা॥
- আকাশী চরগ মাথাত পরিল
- মুখর মাত হরিল।
- মহা শোকশেল হিয়াত পরিল
- থিবয়ে যেন মরিল॥ ১০৯
- হরি হরি বিধি কিহত কি ভৈল
- হাসিতে হরাইল রাজ।
- নৃপতিক চাই করৈ হাহাকার
- কিনো নিদারুণ কাজ॥
- অনেক পুরুষ তোমার সেবক
- তুমিসে আমার দেব।
- কোন মতে আজি তোমাক তেজিয়া
- ঋষিত করিবো সেবা॥ ১১০
- পুত্রতো অধিক দশ গুণ করি
- পালিলা তুমি আমাক।
- একোকালে নতু শুনো প্রাণ প্রভু
- তোমার নিষ্ঠুর বাক॥
- কি কারণে তুমি কিবা মাব বাপ
- হেন নতু জানৈ লোকে।
- তুমি অবিহনে কি করে জীবনে
- কান্দৈ প্রজাসবে শোকে॥ ১১১
- কৈরপরা আসি পরিলেক ইটো
- বিশ্বামিত্র ধূমকেতু।
- ইহেন রাজ্যত সুখতে বঞ্চিবে
- নপাইলো ইহার হেতু॥
- বনবাসী ঋষি রাজ্য ভৈল আসি
- এড়ি যত ধর্ম্ম-কর্ম্ম।
- কেন মতে ইটো পালিবেক রাজ্য
- প্রজার নেজানে মর্ম্ম॥ ১১২
- তিলর কুশর ব্রাহ্মণ ইহার
- রাজাত কমন ফলে।
- খাই বিধ্বংশ্য় একোকে নেজানে
- বানরর নাড়ীকল॥
- স্বভাবে কৃপণ নেদয় নেখায়
- দ্বিজগণ ধন সঞ্চা।
- ভোজনীতে সবে রাজ্য ভাঙ্গিবেক
- আছোক পালি প্রপঞ্চা॥ ১১৩
- রাজ্য চর্চ্চা যত পড়ি থাকিবেক
- শ্রাদ্ধর হুইবে দেবান।
- ইহার নিমিত্তে দিবাক নপাইব
- আন ব্রাহ্মণক দান॥
- অল্পত সন্তোষ নহিবেক ইটো
- ভস্ম করিবেক শাপে।
- হেনয় আক্রোষি ঋষির রাজ্যত
- বঞ্চিবে কাহার বাপে॥ ১১৪
- হরি হরি হরি চন্দ্র মহারাজ
- করিলা কোন বিপত্তি।
- আমার কপালে যিহৌক সিহৌক
- তোমার কি ভৈল গতি॥
- তোমাকেসে লাগি দহে কলেবর
- কিমতে বর্ত্তিবা তুমি।
- এহি বুলি সেনা হেট মাঠ করি
- কান্দি যাই হুমাহুমি॥ ১১৫
- নুশুনিয় বোল নাহি মাত বোল
- কাংশ পরিগৈল জীন।
- ছটফট মাত্র করৈ যত পাত্র
- সবারো মুখ মলিন॥
- মহাশোকে দুঃখে চলে সেনাগণ
- আগক নচলে ভরি।
- এহিমতে ঋষি সহিতে নৃপতি
- পাইলন্ত সিটো নগরি॥ ১১৬
- রাজা আসিবার শুনি নরনারী
- অযোধ্যার ভৈল বাজ॥
- সেনার বিষাদ দেখি বোলে সবে
- কিবা ভৈল অসৎ কাজ॥
- আগ বাঢ়ি সবে শোধা শোধা করি
- আকুল সমস্ত প্রাণী।
- শোকতে কথাক কহিবে নপারি
- শোকে গদ গদ বাণী॥ ১১৭
- কি কহিবো আর সমূলি বুড়িল
- কাহাক থাকিবো চাই।
- বিশ্বামিত্র ঋষি সবে রাজ লৈলা
- রাজাক দেশ ডকাই॥
- পুত্র ভার্য্যা লৈয়া গুচিব নৃপতি
- রাজ্যর নিকল হুই।
- হেন শুনি সবে নগরী লোকর
- গাবত লাগিল জুই॥ ১১৮
- মহা শোক শেলে হৃদয় ভেদিল
- দিনত ভৈল আন্ধার।
- হাট বাট চানি নিরন্তর প্রাণী
- করে সবে হাহাকার॥
- ক্রন্দনর আতি উর্ম্মি উঠলিল
- আযোধ্যা নগর যুরি।
- হৃদয়ত মুঠি হানে কতো উঠি
- মাটিতে ফুরে বাগরি॥ ১১৯
- প্রজার ক্রন্দন শুনি হরিশ্চন্দ্র
- নেদন্ত কাতো সিদ্ধান্ত।
- চিত্ত দৃঢ় ধরি অধোমুখ করি
- দুবার আসি পাইলন্ত॥
- অন্তেষ পুরত ভৈলন্ত প্রবেশ
- একেশ্বরে নর দেব।
- শৈবা পটেশ্বরী স্বামীকে দেকিয়া
- শপটে করিলা সেব॥ ১২০
- নৃপতি বোলন্ত শুনা মহাদই
- যেন হুবা আছে কাজ।
- বিশ্বামিত্র ঋষি মোত খুজিলন্ত
- দান দিলো সামরাজ॥
- তুমি আমি পুত্র রোহিতাশ্ব রাজ
- লৈলা যত ধন ধান।
- দেশত থাকিবে আমাক নেদন্ত
- যাইবে লাগে অন্যস্থান॥ ১২১
- কোপে যম সম বিশ্বামিত্র ঋষি
- দ্বারত আচন্ত রই।
- হৈব আথন্তর ওলোবা সত্বর
- কুমরক কোলে লই॥
- যেবে মোত চিত্ত এড়া সবেরিত
- বস্ত্রলোবা একখানি।
- ঋষির হাতত ভালে ভালে আজি
- এড়াই যাওঁ তিনি প্রাণী॥ ১২২
- নমো হরি পদ পঙ্কজ যুগল
- দণ্ডবতে শিরে পরি।
- কৃষ্ণর কিঙ্করে ভণিলা শঙ্করে
- বিচিত্র পদ দুলরী॥
- শুনা সর্ব্বজন আমার বচন
- চিত্ত সাবধান করি।
- পাপ হোক ক্ষয় পুণ্যর উদয়
- ডাকি বোলা হরি হরি॥ ১২৩
- পদ
- ধর্ম্ম পক্ষীগণে বোলে শুনিয়ো জৈমুনি।
- নৃপতির হেন বাক্য শৈয্যা আছে শুনি॥
- রাজাক বোলন্ত প্রভু করিলাহা ভাল।
- ইটো রাজ্য সুখ লৈয়া জীবা কত কাল॥ ১২৪
- অথির সংসার আজি কালি যাইবো মরি।
- কার ধন জন পরিবার বসুন্ধরী॥
- বিশেষ পাত্রক দিলা আনন্দ আমার।
- দেবতা পিতৃর সবে শুজিলাহা ধার॥ ১২৫
- এহি বুলি পুত্রক মাতন্ত দেবী হাসি।
- বাপ রোহিতাশ্ব মোর কোলে চাপ আসি॥
- ইসে কষ্ট ভৈল তোক জীবাওঁ কেন করি।
- পাঞ্চ বরিষত বাপ ভৈলি দেশান্তরি॥ ১২৬
- এহি বুলি বাজভৈলা পুত্র কোলে করি।
- দিব্য রত্নময় মন্দিরক পরিহরি॥
- যত ধনবিত্তক করিলা পরিহার।
- করে সর্ব্ব পরিত্যাগ রাজ অলঙ্কার॥ ১২৭
- হেন দেখি অন্তেশ পুরর যত নারী।
- শোক-শেলে দহে চিত ধরিতে নপারি॥
- মহাদৈক বেঢ়ি সবে করে আর্ত্তরাব।
- আমাক অনাথ করি কৈক যোবা মাব॥ ১২৮
- পৃথিবীতে পরি কেহো পরৈ লোতালোতি।
- কোনো হৃদয়ত দুই হাতে হানে মুঠি॥
- কোন সতে আমাক ঋষিক দিলা দান।
- তুমি অবিহনে কেনে ধরিবোহো প্রাণ॥ ১২৯
- সাত পৃথিবীর রাজা তান পটেশ্বরী।
- কোননো বিপাকে আই ভৈলা দেশান্তরি॥
- বেহাইবাক নপাইলো ভাগিল ভরাহাট।
- হরি হরি কিনো বিধি লেখিলা ললাট॥ ১৩০
- সুখে সুতি থাকা মাব রত্নর শয্যাত।
- কতো নারীগণে আসি যান্তে ভরি হাত॥
- কতোহো চামরে ধরি ধোলে প্রতি নিত।
- আজি কেনে নিদ্রাযাই কেবল ভূমিত॥ ১৩১
- খোজ পাঞ্চ সাত যান্তে বিষাই যার পাব।
- মহা দীর্ঘ পঠত চলিবা কেন মাব॥
- কেনমতে একলে রাজার ধরা আল।
- কোনে তুলিবেক মাব তোমার চবাল॥ ১৩২
- এহি বুলি মহাশোকে কান্দে নারীগণ।
- সবাকো বুলিলা শৈব্যা প্রবোধ বচন॥
- ইসব জঞ্জাল আবে নপাতা আমাক।
- কোনে বধিবাক পারে বিধি লিখিতাক॥ ১৩৩
- ভূঞ্জিলোহো রাজ্য গোসাঁই দিলা যত কাল।
- কাহার নকনো দোষ আমার কপাল॥
- মোক যেবে দয়া আছে শুনা নারীগণ।
- উলটিয়া যোবা সবে এড়িয়া ক্রন্দন॥ ১৩৪
- উলটা উলটা বুলি প্রবোধিয়া যান্ত।
- তথাপি কান্দিয়া যান্ত নিদিয়া সিদ্ধান্ত॥
- এহিমতে সাত দুবারর ভৈল বাজ।
- তেরকরি চাই দেখিলন্ত ঋষিরাজ॥ ১৩৫
- কৈক যাস পাপী বুলি উঠিগৈলা রাগ।
- দণ্ডধরি লবরিয়া ভেটিলন্ত আগ॥
- কোবাইবে লাগিলা আতি দশন কামুরি।
- ছবর চাপর কাকো দেন্ত ঝাপগুরি॥ ১৩৬
- মরণক ভয়ে নারীগণ নিরন্তরে।
- উলটিয়া লরদিয়া পশিলন্ত ঘরে॥
- ভার্য্যায়ে সহিতে রাজা ঋষিক প্রণামি।
- বোলন্ত থাকিবা হেরা চলিযাওঁ আমি॥ ১৩৭
- এহি বুলি নৃপতি চিত্তক দৃঢ়করি।
- চলি যান্ত হরিষে শৈব্যাক আগ করি॥
- কিঞ্চিতেক নাহিকয় কপট বিষণ্ণ।
- দুই হন্তকো দেখি আতি প্রসন্ন বদন॥ ১৩৮
- কতো দূর যান্তে ঋষি ভেটিলন্ত আগ।
- জানিলো নৃপতি তোক তই যেন লাগ॥
- অমূল্য যতেক ধন তোর অলঙ্কার।
- গাবত লৈযাস মোর অর্দ্ধেক ভাণ্ডার॥ ১৩৯
- অনেক টঙ্কার বস্তু শরীরত যাই।
- কিবা দিলি নুবুজিলো তোর অভিপ্রাই॥
- নৃপতি বোলন্ত কষ্ট নকরিবা আত।
- মনত নভৈল লরি আসিলো হঠাৎ॥ ১৪০
- লয়োক বুলিয়ো রাজা দেন্ত আগবাঢ়ি।
- তথাপিতো ক্রোধত আপুনি লন্ত কাঢ়ি॥
- পরম আক্রোষি ঋষি অল্প ক্ষমা নাই।
- বাকলি পিন্ধায় বস্ত্র লৈলা সোলোকাই॥ ১৪১
- দেখি শৈব্যা আপুনি কাঢ়ন্ত অলঙ্কার।
- দেখিয়া ক্রন্দন করে অবোধ কুমার॥
- দেখি ঋষি খঙ্গে খেদি গৈলা আগবাঢ়ি।
- ভূমিত পেলাই অলঙ্কার লৈলা কাঢ়ি॥ ১৪২
- আই বাপ বুলি পারে কুমারে আতাস।
- বিপরিত দেখি সর্ব্বজন মন ত্রাস॥
- নমাতি আছন্ত চাই রাজা মহাদই।
- আপোন ইচ্ছায়ে ঋষি গৈলা কাঢ়িবই॥ ১৪৩
- পটেশ্বরী মাতন্ত পুত্রক কোলে ধরি।
- উঠ উঠ পুতাই ক্রন্দন পরিহরি॥
- দেশান্তরি ভৈলে কি করিবে অলঙ্কার।
- তোহোরেসে দুঃখে দুঃখ ভৈলেক আমার॥ ১৪৪
- এহি বুলি লরি গৈলা কুমারক লই।
- হরিশ্চন্দ্র পাচত আগত মহাদই॥
- ভার্য্যাসমে বহুদূর যান্ত মহারাই।
- রহরহ বুলি ঋষি টঙ্কিলা দুনাই॥ ১৪৫
- লবড়ম্বে আগভেটি আগে ভৈল ঠিব।
- দেখি নৃপতির অন্তরীক্ষ ভৈল জীব॥
- দক্ষিণা নেদিয়া মোক কৈক লাগি যাস।
- যিবা কিছু দিলি গৈল দানত আপাস॥ ১৪৬
- ঋষিক মাতন্ত রাজা করযোড় করি।
- দিলো যত ধন অকণ্টকা বসুন্ধরী॥
- কেবল শরীর মাত্র রহি আছে তিনি।
- দক্ষিণার নিমিত্তে আমাক লোবা কিনি॥ ১৪৭
- শুনি ঋষি বুলিলন্ত তেবে মোর ভাল।
- পটেশ্বরী ধরিবেক ছবালর আল॥
- তই বসি খাবি তোক নিনে মোক আন্তে।
- কিবা দিবি দক্ষিণা নৃপতি বোল যান্তে॥ ১৪৮
- আগেদেওঁ বুলি যিবা পাছে নেদে দান।
- দুর্ঘোর রৌরব নরকত তার থান॥
- পতি স্বত্বা ব্রহ্মস্বে করিবে সর্ব্বনাশ।
- দিয়োক দক্ষিণা রাজা হুয়োক উদাস॥ ১৪৯
- নৃপতির বোলন্ত ঋষি হুয়োক প্রসন্ন।
- সম্প্রতি আমাত কিছু নাই আন বন॥
- কতোদিবসক লাগি দিয়োক মেলানি।
- যেন তেন প্রকারে দক্ষিণা দেওঁ আনি॥ ১৫০
- বিশ্বামিত্রে বোলন্ত স্বরূপ কহ বাণী।
- কত দিনে আমাক দক্ষিণা দিবি আনি॥
- মোক ভাণ্ডি এড়াই যাইবে কোন বাপে।
- একতিলে ভষ্ম করিবোহো চণ্ড শাপে॥ ১৫১
- নৃপতি বোলন্ত ঋষি হুয়ো উপশান্তি।
- বিস্তর নোবোলো মাসেকত দিবো খাণ্টি॥
- তথাপি দিবাক নপারোহো দক্ষিণাক।
- তেবে যেন যুবাই ঋষি করিবা আমাক॥ ১৫২
- ঋষিয়ে বোলন্ত চলা শুভক্ষণ বেলা।
- মোহোর দক্ষিণা রাজা নকরিবা হেলা॥
- পুত্র ভার্য্যা সহিতে যাউক অপ্রমাদে।
- চিরঞ্জীব হরিশ্চন্দ্র মোর আশীর্ব্বাদ॥ ১৫৩
- তোর যত শত্রু নিরন্তর হৌক ক্ষয়।
- পথতো নুহিবে সিংহ ব্যাঘ্র সর্প ভয়॥
- যায়োক কুশলে একো নোহোক বিপাক।
- যেন নপাসরস আমার দক্ষিণাক॥ ১৫৪
- হেন শুনি হরিশ্চন্দ্র এহি হৌক বুলি।
- প্রদক্ষিণে ঋষি পাবর লৈলা ধুলি॥
- ধৈর্য্যক আলম্বি একো ভিতিক নচাই।
- কৃষ্ণক সুমরি চলিযান্ত মহারাই॥ ১৫৫
- নাহিকে সহায় লগে ভার্য্যা পুত্র মাত্র।
- বাকলী বসন অলঙ্কার জল পাত্র॥
- আজি খাইবে নাই ভৈলা ভিক্ষুকর বেশ।
- এহিমতে মহা দুঃখ লভিল বিশেষ॥ ১৫৬
- স্বামীর পাছত শৈব্যা শান্তি চলিযান্ত।
- শিশুকাল হন্তে নতু গৃহর বজান্ত॥
- নয়ন পুত্তলি যেন সুকোমল কাই।
- প্রত্যক ভরিত ফুটি রুধির বজাই॥ ১৫৭
- কতোদূর যান্তে ভৈলা পিয়াসে বিকল।
- শরীর ঢাকিয়া বহি যায় ঘর্ম্মজল॥
- তর তরি শুখাই আতি বদন মণ্ডল।
- শিশির লাগিয়া যেন সঙ্কোচ কমল॥ ১৫৮
- আগত নচলে আউর সুকোমল পাব।
- পথ শ্রমে পীড়িলেক মুখে নাসে রাব॥
- রাজাক বোলন্ত প্রভো কহিয়ো প্রমাণ।
- আউর কত বেলি পাইবো রহিবার স্থান॥ ১৫৯
- হেন শুনি হরিশ্চন্দ্র ভৈলা অধোমুখ।
- হায় বিধি দুঃখর উপরি দিলা দুঃখ॥
- পদুলির বাজ নতু হন্তে সোধে কথা।
- নজানো হুইবেক আরু কমন অবস্থা॥ ১৬০
- লোতক বহিছে অন্তর্গতে দহে চিত্ত।
- পটেশ্বরী আকলিল স্বামীর ইঙ্গিত॥
- চলিলো নৃপতি যাইবাক পারো আমি।
- রঙ্গেসে পুচিলো চলিবাক পারো স্বামী। ১৬১
- নৃপতি বোলন্ত ধীরে আইস প্রাণেশ্বরী।
- নগৈল আসিবে খেদি ঋষি কোপ করি॥
- যেনে তেনে নগরর বাজ হওঁ গই।
- বঞ্চিবো রজনী আজি এক থানে রই॥ ১৬২
- এহিবুলি হরিশ্চন্দ্র ভার্য্যা পুত্র সমন্বিতে
- অযোধ্যা পুরর ভৈল বাজ।
- হেন দেখি নরনারী ছবাল পর্য্যন্তে আসি
- রজাক বেড়িলে সবে বাজ॥
- হা প্রভু কৈক যাহা অযোধ্যার নিজ নাহা
- ভকত জনক তুমি এড়ি।
- আবে প্রাণ দান দিয়া আমাক লগত নিয়া
- এহি বুলি পারে সবে গেড়ি॥ ১৬৩
- তুমি জীব তুমি প্রাণ তুমি বিনে নাহি আন
- তুমিসে পরম ইষ্টদেব।
- স্বপোনে সসেতে আমি তোমাকেসে দোখো স্বামী
- একচিত্ত মনে করো সেব॥
- হেন রাজা আবে এরি কোন মতে চিত্ত ধরি
- প্রভুদেব কৈক লাগি যাহা।
- তুমি এরি গলে আমি মরিলোহো হেন জানি
- নেত্র বলাই পাছে নেদেখাহা॥ ১৬৪
- রহিয়োক মহারাই খানিতেক থাকো চাই
- জুরাওঁ আমার জীব প্রাণ।
- দেখন্তে পরম সুখ তোমার কমল মুখ
- নেত্র ভরি সবে করো পাণ॥
- কৈসানি দেখিবো আর ইটো চন্দ্র বদনক
- এহি মানে পরিচ্ছেদ ভৈলা।
- হরি হরি দৈব বিধি স্বপনর যেন নিধি
- তিলকতে সবে নাশ গৈলা॥ ১৬৫
- কৈকগৈলা ছত্রদণ্ড কৈকগৈলা বাদ্যভণ্ড
- কৈকগৈলা প্রচণ্ড প্রতাপ।
- অপার সাগর যেন সুখাই নিশবদ ভৈলা
- হরি হরি হরিশ্চন্দ্র বাপ॥
- পৃথিবীর রাজ যাক বুলনীর বোলা যাক
- আগে পাছে বেঢ়ি চলি যাই।
- অতি শিশু বাল হন্তে মহাশান্তি পটেশ্বরী
- তান ভৈলা বালক সহাই॥ ১৬৬
- পয়ান কালত আসি অসংখ্য পদাতি ঝাকে
- চতুর্ভিতি বেঢ়ি চলি যাই।
- সুবর্ণর রথচয় সুবর্ণ পাখরি হয়
- চলে যত সীমা সংখ্যা নাই॥
- অনেক সেবক সবে আগত যোগান ধরে
- প্রমত্ত হস্তীর কন্ধে উঠি।
- সপ্ত পৃথিবীর পতি চলি যান্ত ভূমি গতি
- দেখি কেনে প্রাণ নযাই ফুটি॥ ১৬৭
- দিব্য বস্ত্র অলঙ্কার সুবর্ণ ভৃঙ্গার যার
- লক্ষ লক্ষ লগে যাই চলি।
- সিটো নৃপতির ভৈল করঙ্গার কমণ্ডলু
- পরিধান গছর বাকলী॥
- অমূল্য রতন সার অক্ষয় ভণ্ডার যার
- দুঃখী ভিক্ষী খাই বলে যোগে।
- সিটো মহা মানী হই ভৈল ভিক্ষাহারী প্রাই
- আজি খাইবে হেন নাহি লাগে॥ ১৬৮
- চন্দ্র হেন জ্বলৈ মুখ পদ্ম যেন নেত্র যুগ
- উন্নত নাসিকা ভ্রুব ধনু।
- দশন মুকুতা পান্তি হাস্য চন্দ্রমার কান্তি
- সর্ব্বগুণে সুকুমার তনু॥
- আজি লাগি মাটি ধুলি নজানিব রাজাবুলি
- দেহা হইবে মলিন কুবেশ।
- নিতে ভিক্ষা করি আনি আবে জীবা তিনি প্রাণী
- কেনে বিধি দেলে হেন ক্লেশ॥ ১৬৯
- হা মাব মহাদই চন্দ্রে সূর্য্যে নেদেখয়
- তোর মুখ কমল রুচির।
- সুবর্ণ প্রতিমা সম জ্বলে দেহা নিরূপণ
- গজ গতি গমন গম্ভীর॥
- রত্নর অলকা পতি যার অঙ্গুলীর কান্তি
- মুখচন্দ্র বিজুলি প্রকাশ।
- যাক চন্দ্র সূর্য্য দেব নেদেখন্ত একোকালে
- হেন মাব ভৈলন্ত উদাস॥ ১৭০
- এখন শুখাইল মুখ কিমতে সহিবো দুঃখ
- দুর্ঘোর দুঃসহ পথশ্রম।
- শরীর আসিল ঘামি দেখি কেনে জীওঁ আমি
- নভৈল আমার কেনে যম॥
- মহা পতিব্রতা শান্তি ভুমি পাবে চলি যান্ত
- তাহাক দেখিয়া সর্ব্বলোকে।
- সমস্তে মর্য্যদা গৈল হেনসে বিপত্তি ভৈল
- শরীর দগধ করি শোকে॥ ১৭১
- হরি হরি রোহিতাশ্ব পাঞ্চ বরিষতে বাপ
- বঞ্চিলেক অযোধ্যার ভোগে।
- কিবা পাপ আছ করি হেন দুঃখী দেশান্তরী
- ভৈলি তই কোন দৈবযোগে॥
- দুগ্ধ পিয়া লাড়ু আনি পথে দিব কোনে আনি
- ক্ষুধার্ত নপাইবে অন্ন পান।
- হরিশ্চন্দ্র শৈব্যা শান্তি তোর দুঃখ দেখি আতি
- জানিলোহো সঙ্কলীবে প্রাণ॥ ১৭২
- রহ রহ মহারাই তুমি বিনা প্রাণ যাই
- হেন জানা সবে আমি মরা।
- বচনে আশ্বাস বুলি খণ্ডায়োক গুণ গালি
- হৃদয়র শরক উদ্ধার॥
- এহি বুলি বাট ভেণ্টি পারৈ সবে লোটালুটি
- নৃপতিক যাইবাক নেদই।
- প্রজার সন্তাপ দেখি চল চল করে আখি
- রহিলন্ত রাজা মহাদই॥ ১৭৩
- লোকর কারুণ্য বাণী শুনি রাজা জানিলেক
- অন্তর্গতে দহে শরীরক।
- ধরিবে নোবারি চিত ভৈলা রাজা বিমোহিত
- দেখিলন্ত শোকর যমক॥
- প্রবোধিলা পটেশ্বরী নিজ ধর্ম্ম মনে ধরি
- তবধ আচন্ত কতোক্ষণ।
- শোকে গদ গদ মাত সবাহাঙ্কে বুলিলন্ত
- শুনা সবে নর-নারীগণ॥ ১৭৪
- তুমি সবে হেন করা আমার বচন ধরা
- দারুণ সন্তাপ পরিহরা।
- সুস্থ হুবা নর-নারী যায়ো সবে ঘরাঘরি
- ঋষিক নৃপতি বুলি ধরা॥
- যেবে দায়া আছে মোক ওলটা সমস্তে লোক
- কেনেবা ধরন্ত ঋষি পাক।
- নধরিবা গুণ দোষ এরা সবে অসন্তোষ
- মরা বুলি সন্তাপ আমাক॥ ১৭৫
- মহাবেগে জল যেন এক থান হুয়া ফেণ
- খানিতেক থাকি মিল যাই।
- বান্ধবর সমাগম জানিবাহা সেহি সম
- অসার সংসার সমুদাই॥
- বিচারত সবে মিছা তাক কোনে করে ইচ্ছা
- যার কিছু জ্ঞান সম্পজিল।
- হেন জানি এরা মর্ম্ম পালিয়োক নিজধর্ম্ম
- এহি বুলি রাজা প্রবোধিল॥ ১৭৬
- নমো নমো হরি পদ পঙ্কজ যুগল শিরে
- দণ্ডবতে পড়ি শতবার।
- হরির চরণ সেবি কৃষ্ণর কিঙ্কর কবি
- ছবি বন্ধে রচিলা পয়ার॥
- শুনা সবে বোলো হিত কৃষ্ণত অর্পিয়ো চিত
- এরা আন কথা সবে মিছা।
- আসনত বসি থাকি হরি হরি বোলা ডাকি
- যেবে আছে বৈকুণ্ঠক ইচ্ছা॥ ১৭৭
- 'পদ'
- যেবে আছে বৈকুণ্ঠক ইচ্ছা॥ ১৭৭
- পক্ষিগণে বোলন্ত শুনিয়ো ঋষিকথা।
- পাছে যেন ভৈলা হরিশ্চন্দ্রর অবস্থা॥
- প্রজার সহিতে কথা কহিবার দেখি।
- জানি গৈলা ঋষি পাছে খানিকো নাপেক্ষি॥ ১৭৮
- গুঞ্জহেন ফুরৈ আরকত চক্ষু দুই।
- কম্পি দুই ওষ্ঠ মুখে নিকলয় জুই॥
- কঙ্কালত কপিঙ্গ বান্ধয় টানি টানি।
- ডাক দি বোলন্ত তোর কথা আছো জানি॥ ১৭৯
- করকর করি ঋষি চোবাবন্ত দান্ত।
- দণ্ড তুলি যম যেন ক্রোধে খেদি যান্ত॥
- নৃপতি বোলন্ত বর ভৈল অথন্তর।
- শীঘ্রে ইথানর পরা হুয়োক অন্তর॥ ১৮০
- এতেকতে বিশ্বামিত্র খেদি পলাই আসি।
- কোবাইবে লাগিলা খঙ্গে দণ্ডক উল্লাসি॥
- মোক দ্রোহ করি চলে পাতি আছ কুণ্ডা।
- এহি বুলি কাহারো মুখত মারে কুন্দা॥ ১৮১
- হুল স্থূল লগাইল প্রজার পশি রাজ।
- উভরিয়া ফুরন্ত ক্রোধত ঋষিরাজ॥
- চবর চাপড় মারি করৈ তাল ফাল।
- পলাইবে লাগিল প্রজা যেন গরুপাল॥ ১৮২
- পথ এরি পলাই কতো কেহো বলে টানে।
- কতো লবড়ন্তে জুন্তি খাই পরে খালে॥
- এহিমতে পলাই প্রজা ঋষিক বিভঙ্গে।
- মাতিবে লাগিল ঋষি নৃপতিক খঙ্গে॥ ১৮৩
- হাউরে পাপিষ্ঠ দুষ্ট নষ্ট কুলাঙ্গার।
- আগে দান দিয়া মোক যত রাজ্যভার।
- এবে কেনে তাক লাগি কর অনুশৌচ।
- প্রজার সহিতে তোর কিসর আলচ॥ ১৮৪
- জানিলো লৈবাক চাস মোর রাজ্য কাঢ়ি।
- ধিক্ ধিক্ ধর্ম্ম হীন হরিশ্চন্দ্র হারী॥
- বচন যতেক তোর যেন জল রেখা।
- মোহোর আগত পাপী রাজা হেন দেখা॥ ১৮৫
- মোত ঘাঞ্চ লগাই তোর জীবে হেন শাস।
- পুনু রাজ্য লৈবে লাগি প্রজার চাপ পাশ॥
- আজি কোবাই ভাঙ্গিবোহো তোর মুণ্ড খুলি।
- এহি বুলি খেদি ঋষি যান্ত দণ্ড তুলি॥ ১৮৬
- হেন দেখি নৃপতি কান্দন্ত তর তরি।
- যাওঁ যাওঁ বুলি চলি যান্ত শীঘ্র করি॥
- মহা দৈক হাতত ধরিয়া লৈয়া যান্ত।
- আইস আইস বুলিয়া পাছক লাগি চান্ত॥ ১৮৭
- মহা শান্তি চারু দেহা আতি সুনির্ম্মল।
- ভাগরে পীড়িলা আতি বহে ঘর্ম্ম জল॥
- আউল ভৈল কেশ মুখ হুই তর তরি।
- যাইবে নোবারন্ত রাজা লৈযান্ত আজুরি॥ ১৮৮
- দেখি মহা কোপে বিশ্বামিত্র দণ্ড তুলি।
- কোবাবে লাগিলা মহাদইক মন্দ বুলি॥
- হাউরে পাপিষ্ঠি কেনে নবঢ়াস পাব।
- এভুরাজা সুখ বুলি ঘেলাবস গাব॥ ১৮৯
- এহি বুলি দুনাই কোবাবন্ত দণ্ড ধরি।
- ততাপিতো মহাশান্তি শৈব্যা পটেশ্বরী॥
- ধর্ম্মক চাহন্তে একো নেদন্ত সিদ্ধান্ত।
- ত্রাহি কৃষ্ণ কৃষ্ণ সুমরন্ত মাত্র যান্ত॥ ১৯০
- কুমরে আটাস পারে মাবর কোলাত।
- নৃপতিক লাগি উঠি মেলৈ দুই হাত॥
- ঋষির মূর্ত্তিক দেখি কাম্পে তর তরি।
- চক্ষু মুদি লুকাইল মাবর গলে ধরি॥ ১৯১
- নৃপতিয়ো আন একো নোবোলন্ত বাক।
- ঝান্তে আহা বুলি নেন্ত আজুরি শৈব্যাক॥
- আইস প্রাণেশ্বরী বুলি লৈ যান্ত ঘসাই।
- রোহিতাশ্ব কান্দে নৃপতির মুখ চাই॥ ১৯২
- হেন দেখি প্রজা সবে করে হাহাঙ্কার।
- হরি হরি মাব কিনো বিপত্তি তোমার॥
- চন্দ্র সূর্য্যে দেখিবাক নপান্ত যাহাক।
- কৈর বনবাসী আসি কোবাবৈ তোমাক॥ ১৯৩
- মহাশান্তি আইর আবে হেন সে বিলাই।
- কেন মতে নৃপতি আগত আছা চাই॥
- এবেসে জানিলো হরিশ্চন্দ্র তুমি মরা।
- এহি বুলি কান্দৈ প্রজা অন্তরর পরা॥ ১৯৪
- সেহি বেলা পাঞ্চ বিশ্বদেব আসিলন্ত।
- মহাদৈক দেখিয়া অশেষ কান্দিলন্ত॥
- হরি হরি মহাশান্তি শরীর নসহে।
- তোমার দুঃখত সকলোরে দেহা দহে॥ ১৯৫
- হরিশ্চন্দ্র রাজার তুমি সে পটেশ্বরী।
- কোন মতে পাপীষ্ঠে কোবাবে দণ্ড ধরি॥
- আকাশতে থাকিয়া করন্ত হাহাকার।
- হা-হরিশ্চন্দ্র কিনো অবস্থা তোমার॥ ১৯৬
- এক চত্র রাজা তুমি সাতো পৃথিবীর।
- কৃষ্ণর ভকত সন্ত সোহৃদ শরীর॥
- যাহার যজ্ঞত নদী বহিলেক ঘৃতি।
- সমস্ত দেবতা ভৈল পরম তৃপিতি॥ ১৯৭
- হেন মহা বৈষ্ণব নৃপতি ধর্ম্মশালী।
- ইহাক খেদাইল ঋষি দেশর নিকালি॥
- দেব-দিজ পিতৃর খণ্ডাইলে সবে আশ।
- দুর্ঘোর নরকে পাপী তোর হৈব বাস॥ ১৯৮
- আজিসে আমার সবে আশা ভৈল ছেদ।
- পাপী বিশ্বামিত্র ঋষি দিলে হৃদি খেদ॥
- রাজার ডকায়া সবে লৈল রাজ্যভার।
- তথাপিতো মনে ক্ষমা নাই দুরাচার॥ ১৯৯
- অতি অপ্রমাদি পতিব্রতা বর-নারী।
- কোননো স্বর্গক পাইবি আজি আঙ্কমারি॥
- ঋষি হৈয়া ভৈল এতমান মন্দমতি।
- ইটো অধর্ম্মর ফলে যাইবে অধোগতি॥ ২০০
- এহি বুলি পাঞ্চো বিশ্বদেব পারে গালি।
- ক্রোধিলন্ত বিশ্বামিত্র বজ্রর বটালি॥
- শুন অরে সঞ্জকারী পাঞ্চো বিশ্বদেব।
- তোমাক মধ্যস্থ করি আনিয়াছে কেব॥ ২০১
- কিসক ভর্ৎসনা কর নুবুজি মহত্ব।
- কোনে জানু পারে আসি পরর শ্রাদ্ধত॥
- যেন বাটোবাল হুয়া শশার দেই শ্বাস।
- কালে গ্রাসিলেক তোক আমাক জোঙ্কাস॥ ২০২
- দেব বোলাই কব কথা কেবলে অহমহ।
- খানিতেক রহ আর্জি ভাঙ্গো সবে গৃহ॥
- খাইবে পাই রাজার মাত পক্ষপুর।
- থাক আজি সবারো ভাবনা করো চুর॥ ২০৩
- স্বরূপত ব্রহ্ম ঋষি মই হও যেবে।
- নর হুয়া পৃথিবীক যোবা তোরা সবে॥
- আমাক পারিলি গালি গ্রাসিলেক পাপে।
- গর্ব্ভবাস নরক ভুঞ্জিয়ো মোর সাপে॥ ২০৪
- হেন শুনি পাঞ্চো বিশ্বদেব আসিলন্ত।
- আমিও করিব পারো শাপি তোর অন্ত॥
- তথাপিতো নশপোহোঁ ক্ষমা ধর্ম্ম ধরি।
- দিয়ো শাপ অন্ত ঋষি ক্রোধ পরিহরি॥ ২০৫
- রাজার অন্তরে আমি পারিলোহো গালি।
- ঋষি ভৈলে হৈবে লাগে ক্ষমা ধর্ম্মশালী॥
- হেন শুনি বিশ্বামিত্র ভৈল উপশান্ত।
- পাঞ্চ বিশ্ব দেবক সম্বোধি মাতিলন্ত॥ ২০৬
- একোকালে ব্যর্থ নাহি আমার বচন।
- তথাপিতো সীমা দেওঁ শুনা দেবগণ॥
- পাণ্ডবর ভার্য্য হুইবে দ্রৌপদী প্রক্ষাত।
- তাহান গর্ব্ভত অঙ্গে হুইবা সবে জাত॥ ২০৭
- নহিবে বিবাহ বংশ নথাকিবে ভয়।
- অল্পকালে মরি পাইবা দেবর নিলয়॥
- দুনাই অমর হৈবা খণ্ডিবা দুর্গতি।
- হেন শুনি পাঞ্চদেব গৈলা অম্রাবতী॥ ২০৮
- পক্ষিগণ বদতি শুনিয়ো মহাশয়।
- সেহিসে কারণে পাঞ্চ পাঞ্চালি তনয়॥
- অল্পকালে মরি পাঞ্চ ভৈলা পূর্ব্ববত।
- নভৈলা বিবাহ কারো ঋষির শাপত॥ ২০৯
- জৈমুনি বোলন্ত পক্ষী কহিয়োক কথা।
- পাছে যেন ভৈলা হরিশ্চন্দ্রর অবস্থা॥
- বিশ্বামিত্র খেদিয়া গৈলন্ত কোন দেশ।
- মহা কৌতুহলে শুনো কাহিনী নিশেষ॥ ২১০
- পক্ষিগণে বোলে কথা শুনা আতঃপরে।
- পাঞ্চ বিশ্বদেবক শাপন্ত ঋষিবরে॥
- সেহি সময়ত রাজা ঋষিক এড়াই।
- ভার্য্যায়ে সহিতে দূর গৈলন্ত পলাই॥ ২১১
- উলটিয়া নিরীক্ষি চাহন্তে মহারথ।
- ঋষিক নকরি দৃষ্টি যোজন পথত॥
- লড়ি গৈলা বিশ্বামিত্র হেন অনুমানি।
- বৃক্ষর ছায়াত বসিলন্ত তিনি প্রাণী॥ ২১২
- পাঞ্চ বরিষর শিশু কোমল ছবাল।
- ক্ষুধায়ে পীড়িল আতি ভৈল লাল কাল॥
- দুইরো মুখ চাই কান্দে ক্ষুধা লাগে বুলি।
- এতেকে শুনন্তে রাজা মরন্ত সমুলি॥ ২১৩
- কিবা দিবো বুলিয়া কান্দন্ত মহারাই।
- মহাদই দেখি ভৈলা বিহ্বল পরাই॥
- ক্ষুধায়ে তৃষায়ে রাজা ভৈলন্ত হতাশ।
- ভাগরে পীড়িলে ঘনে কাঢ়য় নিশ্বাস॥ ২১৪
- ঝুমূরী
- মহাখেদ পাইলা শান্তি। প্রয়াসিত ভৈলা আতি॥
- ওষ্ঠ কণ্ঠ সুখাই মুখ। সহিবে নোবারে দুঃখ॥ ২১৫
- পড়িলন্ত পৃথিবীত। ভৈলা আতি বিমোহিত॥
- নাহি একো শ্রুতিজ্ঞান। উড়িগৈলা ধাতু প্রাণ॥ ২১৬
- যেন পাত ভৈল আয়ু। নাসাত নাসয় বায়ু॥
- মৃতকর যেন থান। দেখি রাজা বিদ্যামান॥ ২১৭
- হাহামরে প্রাণেশ্বরী। আথে বেথে গলে ধরি॥
- শিরত সিঞ্চিল জল। দহে দেহা শোকানল॥ ২১৮
- জীয়ান্ত সাবটি ধরি। উঠি উঠ প্রাণেশ্বরী॥
- করা কেনে অযুগুত। কান্দৈ রোহিতাশ্ব পুত্র॥ ২১৯
- করোয়োক স্তন পান। কেনে নেদা সমিধান॥
- ফুটি যাই মোর প্রাণ। আপোনহি সর্ব্বজান॥ ২২০
- সর্ব্বকালে বুজা মোক। নেমাতা স্নেহর পোক॥
- কিনো ভৈলা নিদারুণ। কতেক বর্ণাইবো গুণ॥ ২২১
- রত্নর শয্যাত শোস। তাতো নাহি পরিতোষ॥
- আজি পৃথিবীত ঢলি। পড়ি সুখে নিদ্রা গৈলি॥ ২২২
- আসংখ্যাত নারী যাক সর্ব্বক্ষণে সেবৈ তোক॥
- চামরে ধরিয়া ঢুলে। সুবর্ণর চতুর্দ্দোলে॥ ২২৩
- অন্তেষ পুরত ফুরৈ। নেত্র কান্দোবানে ঘুরৈ॥
- সিটো প্রাণ পটেশ্বরী। হণ্ঠী যাইবে কেন করি॥ ২২৪
- এখনে ভাগিল রথ। কেনে যাইবো দূর পথ॥
- হাহা বিধি কিনো দুঃখ। শৈব্যার মুখত মুখ॥ ২২৫
- দিয়া কান্দৈ মহারাই। নেত্র জল বহি যাই॥
- ফোকারে নিশ্বাস আতি। হা প্রিয়া বুলি মাতি॥ ২২৬
- তোর শোকে দেহাদহে। মোর ক হৃদয়ে সহে॥
- এহি বুলি করা মন্যু। হাতে মর্জ্জিলন্ত তনু॥ ২২৭
- সিঞ্চিল শিরত জল। দেহা ভৈলা অবিকল॥
- কতো দেলি প্রাণ আইল। শৈব্যা চক্ষু মেলি চাই॥ ২২৮
- নৃপতি কান্দন্ত ধরি। হেন দেখি পটেশ্বরী॥
- রাজার ধরিয়া পাবে। বুলিললন্ত বহুভাবে॥ ২২৯
- সপ্ত পৃথিবীর পতি। তোমার হেনসে গতি॥
- প্রসন্ন করিয়ো মুখ। কিছু নহে শোক দুখ॥ ২৩০
- ক্ষণেকতে হোবে নষ্ট। আকে লাগি কোনকষ্ট॥
- জানা সবে শাস্ত্র ধর্ম্ম। কেনে তুমি করা মর্ম্ম॥ ২৩১
- সংসার সৃজিলা বিধি। যেন স্বপনর নিধি॥
- জাগিলে সমস্তে হরৈ। কোনে মোর বুদ্ধি করৈ॥ ২৩২
- ধৈর্যেসে আপদ তরি। আন চিন্তা পরিহরি॥
- করিয়োক উপদেশ। যাইব আমি কোনদেশ॥ ২৩৩
- ঋষির দেশর রাজে। নাহি ঠাই একো রাজে॥
- ইটো চিন্তা আসরিষ। করিয়োক বিমরিষ॥ ২৩৪
- হেন শুনি নৃপবরে। গুণিলন্ত নিরন্তরে॥
- সাতোদ্বীপা পৃথিবীত। থানর নভৈল থিত॥ ২৩৫
- নেরাইলো ঋষিরহাত। চিত করে উতপাত॥
- যাইবো আবে কোন পুরী। পাইবে আসি ঘুরি ঘুরি॥ ২৩৬
- এহি বুলি নরনাথ। জানুত দিলন্ত মাথ॥
- নুগুছে ঋষির ভয়। দেখে রাজা তমোময়॥ ২৩৭
- প্রবন্ধে গুণন্ত বসি। মনত পরিল আসি॥
- আছে পুরী বারাণসী। স্বস্হভৈলা মহাযশী॥ ২৩৮
- প্রণামিয়া কৃষ্ণপাবে। ঝুমুরী শঙ্করে গাবে॥
- শুনা এক চিতকরি। সুখে যোবা আত্মাতরি॥
- আন চিন্তা পরি হরি। সবে বোলা হরি হরি॥ ২৩৯
- ’’’পদ’’’
- শৈব্যাক সম্বোধি মাতিলন্ত মহারাজে।
- আমার নেদেখো থান বারাণসী বাজে॥
- পৃথিবীর বহির্ভূত সংসারতে সার।
- তাতেসে নাহিকে মনুষ্যর অধিকার॥ ২৪০
- সর্ব্বকালে যাত বিশ্বনাথ অধিকারী।
- তৈকে লাগি যাওঁ উঠিয়োক বর নারী॥
- মই লৈয়া যাওঁ আবে কুমরক কোলা।
- তোমার বোলানে যাওঁ ধীরে ধীরে চলা॥ ২৪১
- পুত্র কোলে করি লরিলন্ত মহাভাগে।
- মহাদৈয়ো যান্ত নৃপতির আগে আগে॥
- দণ্ডেকর পৃথত দিনেক যাই বহি।
- বঞ্চন্ত রজনী মঠ মণ্ডপত রহি॥ ২৪২
- কতো গৃহস্থর ঘরে লন্ত গৈয়া বাস।
- কতো দিনা নৃপতির পরৈ উপবাস॥
- একোকে নপাই কতো রহিবার বনে।
- শরীর বিবর্ণ ভৈল রৌদ্র বরষুণে॥ ২৪৩
- নাহি অন্ন বস্ত্র সবে বাকলি বসন।
- ভিক্ষায়ে ভোজন ভৈলা ভূমিত শয়ন॥
- ধূলায়ে ধূসর তনু চিনন নযাই।
- হেন মহাকষ্টে দুখে যান্ত মহারাই॥ ২৪৪
- কতোদিনে পাইলা গৈয়া পুরী বারাণসী।
- আগভেণ্টি বিশ্বামিত্র ঋষি আছে বসি॥
- দেখি নৃপতির শিহরিল সর্ব্ব গাব।
- প্রদক্ষিণে ঋষির নমিলা দুই পাব॥ ২৪৫
- ভার্য্যায়ে সহিতে প্রণামিলা মহাবলী।
- ঋষিক বোলন্ত রাজা করি কৃতাঞ্জলি॥
- পাদ্যঅর্ঘ্য দিবো হেন নাহি একোধন।
- সেবাতে ভৃত্যক প্রতি হয়োক প্রসন্ন॥ ২৪৬
- ভার্য্যাক পুত্রক লোবা নুহি মোর প্রাণ।
- বুলিয়োক শীঘ্রে যদি কার্য্য থাকে থান॥
- ঋষিয়ে বোলন্ত আন নাহি প্রয়োজন।
- যেন লাগে দিয়ো মোক দক্ষিণার ধন॥ ২৪৭
- আপোনার মুখে খান্তা করি দিলি আশ।
- আজিয়েরে নৃপতি সম্পূর্ণ ভৈল মাস॥
- দিনা চারি ভৈলে আসি আছো বাট চাই।
- চাহন্তে চাহন্তে তোক আক্ষিয়ো দুখাই॥ ২৪৮
- যেন বুলি আছা আবে সুমরা তাহাক।
- শীঘ্র করি দিয়োক যজ্ঞর দক্ষিণাক॥
- আজি আউর ভাণ্ডিবে নোবারা মহারাজ।
- দক্ষিণা কারণে আইলো এরি রাজ কাজ॥ ২৪৯
- রাজা বোলে যদি আজি পূর্ণ ভৈল মাস।
- আউর কিছু বুলিবে মোহোর নাহি শাস॥
- কিন্তু আছে এভো দেখা দুই ওর সীমা।
- ইয়ো বেলি খানি মোক করিয়োক ক্ষমা॥ ২৫০
- এহি হোক বুলি ঋষি মাতিলা রাজাক।
- পাকদিয়া আসো আজ্ঞালৈয়া আপোনাক॥
- ইবেলিয়ো আসিলে পাতস কাপ জাপ।
- সর্ব্বনাশ করো তেবে দিয়া ব্রহ্মশাপ॥ ২৫১
- হেন বুলি বিশ্বামিত্রে পশিল নগর।
- নৃপতিক পায় আসি মহাচিন্তা জ্বর॥
- যেন ঘোর নির্ঘাত পড়িল আসি মাথে।
- অধোমুখে বসিয়া গুণন্ত নরনাথে॥ ২৫২
- কোন কর্ম্ম করো আবে যাইবো কৈক লাগি।
- কৈত মিত্র আছে কৈত ধন পাইবো মাগি॥
- আপনার মুখে মই বুলি আছো বাক।
- কেনমতে দিবো আজি সিটো দক্ষিণাক॥ ২৫৩
- কত কদর্থনা আউর সহিবো ঋষির।
- এক মনে বোলো এরো আপন শরীর॥
- তথাপিতো ব্রহ্মস্ব থাকিবে মোত রহি॥
- যত বংশ হুইবে তাকো মারিবেক দহি॥ ২৫৪
- ব্রহ্মস্ব রহিলে মোর নুহিবে নিস্তার।
- কত জন্ম পলু হৈয়া থাকিবো বিষ্ঠার॥
- এহি বুলি মনে মনে গুণন্ত নৃপতি।
- এবে কোন উপায়ে নযাইবো অধোগতি॥ ২৫৫
- আপোনাক বিকি ব্রাহ্মণর সুজো ধার।
- আত পরে বুদ্ধি আন নাহিকে আমার॥
- মোর ভাগ্য যে হৌক পুরুষ এরাউক।
- এতেক বোলন্ত আসি প্রবেশিল শোক॥ ২৫৬
- মাত বোল হরিল দেখন্ত অন্ধকার।
- হেন দেখি চিত্ত আউর নসহে শৈব্যার॥
- লোতকে পুরলী আসি গদ গদ মাত।
- ধীরে ধীরে সুন্দরী স্বামীকে মাতে মাত॥ ২৫৭
- কার্য্য সময়ত কেনে ভৈলা হত বুদ্ধি।
- আপদ ব্যাধির হোবৈ ধৈর্য্যেসে ঔষধি॥
- মোর বাক্য ধরা প্রভো চিন্তা পরিহরা।
- অঙ্গীকৃত সত্যক সত্বরে রক্ষা করা॥ ২৫৮
- যিটো পুরুষর নষ্ট ভৈল অঙ্গীকার।
- লোকর বর্জ্জন হোবে জীবন ধিক্কার॥
- নাহি নাহি আন ধর্ম্ম জানা সত্য বিনা।
- জানি আন নিচিন্তিবা দিয়োক দক্ষিণা॥ ২৫৯
- অগ্নি হোত্র করে যিটো পঢ়ে চারি বেদ।
- যত মহা দান আদি করি অবিচ্ছেদ॥
- সকলো নিস্ফল যার লরিল বচন।
- হেন জানি সত্য প্রভো করিয়ো রক্ষণ॥ ২৬০
- কীর্ত্তি নামে এক রাজা আছিল পূর্ব্বত।
- শত অশ্বমেধ আচরিল বিধিবত॥
- আরু এক রাজসূই মনে করি ইচ্ছা।
- স্বর্গ হন্তে পরিল বারেক বুলি মিছা॥ ২৬১
- সত্য নেই ঊর্দ্ধক অপত্যে অধোগতি।
- হেন জানি সত্যক রাখিবে করা মতি॥
- ইন্দ্রতো অধিক সুখ গৈল কত কাল।
- আউর কালে অনুশোচ করা মহীপাল॥ ২৬২
- তোমারেসে দুখ দেখি অন্তর্গত দহে।
- কিকরে জীবন আউর হৃদয় নসহে॥
- শুনা বচনেক বোলো চরণত ধরি।
- বুলিবাক চাহন্তে লোতক পড় ঝরি॥ ২৬৩
- অশেষ ক্রন্দন আসে মনত অসুখে।
- মাতিবে নোবারি আছিলন্ত অধোমুখে॥
- লোতকে ভেদিলে গদ গদ করে মাত।
- আঞ্চলে মলছি মুখ দুনাই বোলে বাক॥ ২৬৪
- উপজিল পুত্র রাজা এতেক বোলন্তে।
- পৃথিবীত মকমকি পড়িল কান্দন্তে॥
- আরু একো বুলিবাক নপারি সুন্দরী।
- করন্ত বিলাপ নৃপতির পাবে ধরি॥ ২৬৫
- হেন দেখি নৃপতির মনত অসুখ।
- মহাদৈক তুলি বস্ত্রে মুছিলন্ত মুখ॥
- কিসক কান্দহ বান্ধৈ বুলিয়ো সত্বর।
- পুনর যে নাম লৈলি আগত কুমার॥ ২৬৬
- কিবা গুণি পৃথিবীত পার লোটা লুটি।
- শীঘ্রে প্রাণেশ্বরী কহ প্রাণ যাই ফুটি॥
- শুনি কতো বেলি ভৈল শৈব্যার চেতন।
- অল্প করি নৃপতিক বুলিলা বচন॥ ২৬৭
- উপজিল পুত্র রাজা তযু যথোচিত।
- মহন্ত জনর হোবে হেনসে উচিত॥
- পুত্র প্রয়োজনে বিভা করয় ভার্য্যাক।
- আবে পুত্র উপজিলে এরিয়ো আমাক॥ ২৬৮
- আন একো উপায় নেদেখো আত বিনা।
- আমাক বিক্রয় করি দিয়োক দক্ষিণা॥
- আপোনার সত্য রাখি করা থির হিয়া॥
- মই বিক্রি যাওঁ প্রভু তুমি মাত্র জীয়া॥ ২৬৯
- আমার নিমিত্তে তুমি এরিয়ো বিমন।
- ইহেন ভার্য্যা পাইবা প্রভু যৈত মন॥
- যজ্ঞ হোক সাম্ফলে দক্ষিণা দিয়া শুজি।
- মোর বাক্য করা প্রভু পূর্ব্বাপর বুজি॥ ২৭০
- শুনা সভাসদ মহাজনর ধর্ম্মক।
- প্রাণান্তিক দুঃখ পাইলে নেরয় সত্যক॥
- সার্ব্বভৌম্য রাজ পদ পুত্র ভার্য্যা যত।
- চাণ্ডালত আপোনাক বিকিলা সত্যত॥ ২৭১
- হেনজানি মহাজনে নেরিবা সত্যক।
- সত্য শাস্ত্র তত্ত্বজানি ভজিয়ো হরিক॥
- কৃষ্ণর ভকতি সত্য ধর্ম্ম অনুপান।
- জানি উচ্চকরি ডাকি বোলা রাম রাম॥ ২৭২
- ছবি
- হেন জানি নৃপতির হিয়া যেন যাই চির
- শোকে আতি হৃদি যাই পুড়ি।
- দেখিলন্ত তমোময় শ্রুতি হীন মহাশয়
- অন্তরীক্ষে ধাতু গৈল উড়ি॥
- জানুত দিলন্ত মাথ কতো বেলি নরনাথ
- শোকত ভৈলন্ত অচেতন।
- কতো হিয়া ভুকু মারি পৃথিবীত মাথা তারি
- আতি শোকে করন্ত ক্রন্দন॥ ২৭৩
- হরি হরি প্রাণেশ্বরী তোর মুখে কেন করি
- আসিলেক বজ্র সম বাণী।
- বুলিলা বিকিবে তোক আতেসে অধিক শোক
- হৃদয়ত শোক-শেল হানী॥
- হেন ভৈলো অধোগামী তোক কি বিকিব আমি
- আপোনার জীবন কাতরে।
- ম্লেচরো নাহিক ধর্ম্ম করিবে হেন কি কর্ম্ম
- কোননো অধম পাপী নরে॥ ২৭৪
- হরি হরি প্রাণেশ্বরী আপদত সেই তরি
- মোহর কণ্ঠর হেমহার।
- কোন সতে তোক এড়ি থাকো মই প্রাণ ধরি
- মুখ্যপ্রাণ তইসে আমার॥
- সুন্দর সরল মুখ দেখিলে পাহরো দুঃখ
- জীয়ো সমুলঞ্চে দেখি যাক।
- চাণ্ডালতো ভৈল ধিক প্রাণ ফুটি নযাই ধিক
- বিকিবোহ হেনয় ভার্য্যাক॥ ২৭৫
- এহি বুলি মহাশয় দেখিলন্ত তমোময়
- পীড়িলেক শোকর ঝঞ্জালে।
- হরিলা চেতন জ্ঞান উড়িলা সমস্তে প্রাণ
- পৃথিবীত পরিল নিঢালে॥
- দেখি শৈব্যা মাথা তুলি বুড়িল বুড়িল বুলি
- আঙ্কোবালি ধরিলা স্বামীক।
- শিরত সিঞ্চিন্ত পানী বোলন্ত মধুর বাণী
- প্রাণ এড়িবাক চাহ কিক॥ ২৭৬
- চক্ষু মেলি চোবা মোক খণ্ডোক দারুণ শোক
- হিয়ার গুছুক ভকভকি।
- তযু অত দুখ দেখি কেনে আছো প্রাণ রাখি
- কান্দন্ত সুন্দরী মকমকি॥
- সুবর্ণর সিংহাসন রত্নময় বিতোপন
- তাতে তুলি কোমল বিছাই।
- তাত থাকা নিদ্রা করি এবে পৃথিবীত পড়ি
- কেনেনিদ্রা গৈলা মহারাই॥ ২৭৭
- পৃথিবীর রাজাগণে খাটিলেক সর্ব্বক্ষণে
- নম্রভাবে ভৃত্য হেন মান।
- ভাণ্ডার সুবর্ণময় দিলা মহারত্ন ছয়
- কোটি কোটি ব্রাহ্মণক দান॥
- রাজ ব্রহ্মভোজ রোল লঙিঘল স্বর্গর কোল
- সঙ্গে বহিলেক পঞ্চামৃত।
- সিটো আজি নরেশ্বরে দক্ষিণা দিবাক ডরে
- মহারাজা পড়িল ভুমিত॥ ২৭৮
- যিটো রাজা হরিশ্চন্দ্র শ্রীমন্ত যেহেন ইন্দ্র
- বুদ্ধি বলে বিষ্ণুর সমান।
- সসাগরা বসুমতি তৃণ যেন করি মত
- ঋষিক উচর্গি দিলা দান॥
- আনো যত হস্তী ঘোড়া তার কোনে পাবে ওরা
- ব্রাহ্মণক দিলা মহারাই।
- সিটো ভৈল ভিক্ষু প্রায় দক্ষিণা দিবার নাই
- ঋষির ভয়ত ধাতু যাই॥ ২৭৯
- হরি হরি বিধি তোর কত অপরাধ ঘোর
- চিন্তিলন্ত এন্তে মহামতি।
- আঙ্ক কিবা শত্রু বুলি এতেক দুর্গতি দিলি
- করিলাহা হেনসে বিপত্তি॥
- সুগন্ধ চন্দন যার গাবে ঘসি মল কাঢ়ে
- রত্ন অলঙ্কার বিরচিত।
- সিটো কাল কৈক গৈল হেনসে বিপত্তি ভৈল
- এবে যেন নাটয় মাটিত॥ ২৮০
- উঠা উঠা প্রাণনাথ মোক চোবা তুলি মাথ
- মোর গাবে অগনি জলয়।
- দিয়া মোক সমিধান যুড়াইবো সমস্তে প্রাণ
- হেরা মই মাতো মহাদই॥
- এবেসে জানিলো আমি মরিলাহা প্রাণস্বামী
- তোমাক পাইলেক মহাকালে।
- এহি বুলি পটেশ্বরী রাজাক গাবক এড়ি
- পৃথিবীত পরিলা নিঢালে॥ ২৮১
- রাজায় দেখন্ত আতি বিমুর্চ্চিত ভৈল সতী
- মুখরো হরিল মাত বোল।
- রোহিতাশ্ব শিশু দেখি ক্ষুধায়ে কান্দিলা আতি
- মাবর চাপিলা আতি কেলি॥
- আই দিয়া অন্নপান ভোকে হেরা যাই প্রাণ
- উঠা বুলি গলত বান্ধই।
- হেরা চোবা সুখাই মুখ নোবারো সহিব দুখ
- এহি বুলি কুমারে কান্দই॥ ২৮২
- মোক কোলে লোবা তুলি হেরা চোবা পুত্র বুলি
- হাতে ধরি ঝঙ্কারে রাজাক।
- ভোকে গাব নুই থির দিয়া ঘৃত লাড়ু ক্ষীর
- কোলাত বসিয়া খাইবো তাক॥
- কতেক ঘুমটি পারা মোক কেনে ভোকে মার
- বুলি কান্দে নৃপতি ক্রন্দন।
- আছারয় হাত ভরি মনত বিকল করি
- গেরি পারি করন্ত ক্রন্দন॥ ২৮৩
- সেহি বেলা বিশ্বামিত্র উগুল থুগুল চিত
- উঠন্তে বৈসন্তে চান্ত বেলি।
- হৃদয়ত এহি ধ্যান পাইবো আজি মই দান
- রাজা দিবে সূর্য্যে অস্তভৈলে॥
- থাকিব নোবারো বসি উঠি লরিলন্ত ঋষি
- যথাত আচন্ত রাজা পরি।
- হাতে দণ্ড কান্ধে ছাতি দেখিয়া কুমারে আতি
- আই বাপ পুলি দিলে গেরি॥ ২৮৪
- ঋষির মূর্ত্তিক দেখি লুকায়া মুদিল আখি
- নৃপতির বুকুত সান্ধিত।
- বিশ্বামিত্র দেখে পাছে মূর্চ্ছা গৈয়া পরি আছে
- মহারাজা ভার্য্যার সহিত॥
- বিমুর্চ্চিত দেখে আতি দক্ষিণা হেরাইল বুলি
- বসিলন্ত আধোমুখ করি।
- সুখ নাহি উঠি যান্ত নিহালি নিহালি চান্ত
- জানো রাজা আছে ছল ধরি॥ ২৮৫
- কান্ধে ঘট ধরি আনি মাথাত ঢালন্ত পানী
- উঠ উঠ হরিশ্চন্দ্র রাই।
- দিয়া ধন দক্ষিণার কান্ধর গুছায়ো ভার
- ধরুবার কৈতো সুখ নাই॥
- বোলন্ত অনেক বাণী ঢালন্ত শিরত পানী
- নৃপতিয়ে চক্ষু মেলি চাইল।
- ঋষিক আগত দেখি আরু মুদিলন্ত আক্ষি
- দুনাই যেন যমপুরি পাইল॥ ২৮৬
- দেখি ক্রোধে জ্বলি গৈল রাজাক বুলিবে লৈল
- তোর সর্বে বুদ্ধি করো চুরি।
- দক্ষিণা দিবাক ডরে পাইল তোক চিন্তা জ্বরে।
- মিছাত আছস ভেম জুরি॥
- উঠা উঠা ধর্ম্ম জানি আপোনার সত্য বাণী
- রাখি মোক শীঘ্রে দিয়া দান।
- সত্য সূর্য্যে আছে রহি সত্যেতেসে আছে মহী
- সত্য সম ধর্ম্ম নাহি আন॥ ২৮৭
- শুন অরে মহাপাপ জানিলো পীড়িলে কাপ
- বিস্তর নোবোলো আর বাক।
- আজি সূর্য্য অস্ত গৈল জানো রসাতলে গৈল
- যেবে আনি নেদে দক্ষিণাক॥
- এড়াইবে কাহার বাপ বংশ দহি দিবো শাপ
- করৈ ঋষি অতি চটি ফটি।
- কিবা করা দেখো আত খানিতেক চাহোঁ বাট
- এটি বুলি গৈলন্ত উলটি॥ ২৮৮
- 'পদ'
- জৈমুনির আগে পক্ষীগণ নিগদতি।
- ঋষিক যাইবার দেখি উঠিলা নৃপতি॥
- শৈব্যায়ো বসিলা কুমরক কোলে ধরি।
- চিন্তন্ত বসিয়া রাজা ঋষিক সমরি॥ ২৮৯
- আজি ঋষিশাপত সবংশে যাইবো তল।
- কৈক যাইবো কি করিবো হৃদয় বিকল॥
- গুণি একো করিবাক নোবারন্ত থির।
- দেখি মহাদই দুনাই বোলে ধীর ধীর॥ ২৯০
- এভো হেন করা প্রভু মোর বাক্য ধরা।
- শাপ অগনিত পরি বিপাঙ্গে নমরা॥
- মোক বিকিয়োক হিয়া করিয়োক থির।
- দক্ষিণাক শুজি হাত এরায়ো ঋষির॥ ২৯১
- হেন শুনি রাজা আতি ভৈলন্ত বিতত।
- কান্দন্তে লোতক নাসে যেন কাষ্ঠবত॥
- শৈব্যাক বোলন্ত বান্ধৈ করা মোর বাক।
- পরম নির্দ্দয় হুয়া বিকিব তোমাক॥ ২৯২
- মহাক্রুর পাপীজনো নাচরে ইহাক।
- তাহাতে অধম হৈয়া বিকিবো তোমাক॥
- কেনমতে কণ্ঠর বজাইবো হেন বাণী।
- হেন বুলি তৈর উঠি গৈলা তিনি প্রাণী॥ ২৯৩
- ভার্য্যায়ে সহিতে গৈলা নগরর মাজে।
- বেঢ়ি বেঢ়ি তাসম্বাক সোধে সাম রাজে॥
- কোন দেশী তোমারা উত্তম তিনি প্রাণী।
- কুমরক দেখি দুগ্ধ লাড়ু দেই আনি॥ ২৯৪
- নৃপতি বোলন্ত শুনা নগরীয়া লোক।
- পরম ঘাতুক মই নুশুধিবা মোক॥
- রাক্ষস পিশাঞ্চ যত সবাতো অধম।
- পৃথিবীত মহাপাপী নাহি মোর সম॥ ২৯৫
- ভার্য্যাক বিকিবে আসি আছো আগবাঢ়ি।
- আহার নিমিত্তে প্রাণ যান্তে আছো ছারি॥
- দাসী ভাবে লবা যেবে আছে প্রয়োজন।
- ঝান্তে বোলা যেবে মোত আছয় চেতন॥ ২৯৬
- এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ আসিল হেন শুনি।
- জক মক দশন মাটিত লাগে ভূণি॥
- চরাচর ফোট জকমক করে কেশ।
- অতি বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ চলন্তে লাস বেশ॥ ২৯৭
- গাব ভরি হাত সিটো আছারন্তে আসি।
- নৃপতিক বোলন্ত বিকস কোন দাসী॥
- মই লইবো কিনি দাসী যত লাগে ধন।
- কত পাইলে দিবি কহ স্বরূপ বচন॥ ২৯৮
- নগরর দ্রব্য আমি গ্রাহক করাওঁ।
- নানাবিধ বস্তু যত ঘরে বসি পাওঁ॥
- দুখ পাইবে লাগি কিছু নকরিয়ো শঙ্কা।
- ঘরত পরিয়া আছে লক্ষকোটি টঙ্কা॥ ২৯৯
- একেখানি ভার্য্যা মোর আতি সুকুমারী।
- প্রাণ সম আমার প্রথম বিহা নারী॥
- কর্ম্ম করিবাক নেদো দুখ পাইবে ডরে।
- পানী আনি আপুনি রন্ধন করো ঘরে॥ ৩০০
- তোর ভার্য্যা দেখো এই স্বভাবে সুথির।
- কর্ম্মত কুশল হৈবে সুদৃঢ় শরীর॥
- এইক দাসী পাইলে ভাল পাইবে ব্রাহ্মণী।
- যেন লাগে লইবি ধন মই নিবো কিনি॥ ৩০১
- ব্রাহ্মণর শুনি বজ্র সমান বচন।
- মহাদুখে নৃপতির বিদারিলা মন॥
- মাতিবাক নপারিয়া রাজা সেই টালে।
- গোর কটা গাছ যেন পড়িল নিঢ়ালে॥ ৩০২
- উঠ কিবা লইবি বুলি ব্রাহ্মণে মাতন্ত।
- অচেতন ভৈল রাজা নেদন্ত সিদ্ধান্ত।
- কণ্ঠর নোলাই মাত বিহ্বল পরাই।
- তবধ নয়নে রাজা থাকিলন্ত চাই॥ ৩০৩
- হেন দেখি দ্বিজর কুপিত ভৈল মন।
- আপোন গাণ্ঠির শোলকাই আনি ধন॥
- রাজা গাবর বাকলীত বান্ধি থৈলা।
- উঠ অরে দাসী বুলি মাতিবাক লৈলা॥ ৩০৪
- শৈব্যায়ে বোলন্ত রৈয়ো খানিতেক লাগি।
- স্বামীক মাতিয়া যাওঁ ইজন্মক লাগি॥
- প্রাণনাথ এবে দেখা দেখি আজি যাই।
- পরিচ্ছেদ করি খানিতেক থাকো চাই॥ ৩০৫
- হেন শুনি খঙ্গাইলে ব্রাহ্মণ অহঙ্কারী।
- কোলার শিশুক ধরি লৈযান্ত আজুরি॥
- কৈর স্বামী পাইলি বুলি কিল মারে ধনি।
- বাম হাতে চুলে ধরি লৈযান্ত আজুরি॥ ৩০৬
- মহাদই বোলে গুরু এরা এরা মোক।
- চক্ষু গোট মেলি চাওঁ রোহিতাশ্ব পোক॥
- মাবর পুত্রর দেখা দেখি আজি যাই।
- চাওঁ মই নেত্র ভরি স্নেহের পুতাই॥ ৩০৭
- ভৈলো কুলক্ষণী আজি ব্রাহ্মণর দাসী।
- তই রাজকুমার নুছুবি মোক আসি॥
- এহি বুলি আর্ত্তরাবে করন্ত ক্রন্দন।
- মাবর বচন শুনি রাজার নন্দন॥ ৩০৮
- মাব মাব বুলি খেদি গৈলা পুত্র খানি।
- দেখি বৃদ্ধ ব্রাহ্মণে মারিলে লাঠি হানি॥
- আইস বুলি তথাপি চাপিল আসি পাশ।
- মাবক সাবটি ধরি পারন্ত আটাস॥ ৩০৯
- হেন দেখি মহাদই করন্ত কাতর।
- নমারা নমারা গুরু মরিবে কুমর॥
- চরণত ধরো গুরু হুয়োক প্রসন্ন।
- কুমরকো কিনিলৈয়ো দিয়ো কিছুধন॥ ৩১০
- কর্ম্ম করিবাক নোবারিবো পুত্রবিনা।
- সন্তাপত মরিবো মিছাতে মোক কিনা॥
- হেন জানি মাব পুত্র একে লগে কিনা।
- নোবারো রাখিবে প্রাণ রোহিতাশ্ব বিনা॥ ৩১১
- হেন শুনি ব্রাহ্মণর পালটিল মন।
- রাজাক বোলন্ত লোবা পুত্র বিকি ধন॥
- যাই লগ লাগি পাশ নেরয় মাবর।
- ধর্ম্ম ব্যবহারে ধন পাস দুই হন্তর॥ ৩১২
- এহি বুলি দুইর ধন করি এক ঠাই।
- বাকলি বস্ত্রত নিয়া বান্ধিল দঢ়াই॥
- মাব পুত্র দুইক নেই এক ঠাইতে বান্ধি।
- পাছত কোবান্তে দ্বিজে দুয়ো যান্ত কান্দি॥ ৩১৩
- কাতি হৈয়া পড়িয়া আছন্ত রাজা চাই।
- আগত বান্ধিয়া ভার্য্যা পুত্র লৈয়া যাই॥
- করন্ত ক্রন্দন পৃথিবীতে পরে লুটি।
- কিবাচাই আছো প্রাণ কেনে নযাই ফুটি॥ ৩১৪
- হা পুত্র ভার্য্যা বুলি হিয়ে হানে মুঠি।
- ঢাত ঢাত মাটিত পরন্ত উঠি উঠি।
- হৃদয়র মাংস কাটি কোনে লৈয়া যাই।
- করন্ত ক্রন্দন তাসম্বাক চাই চাই॥ ৩১৫
- হরি হরি পুত্র সূর্য্যবংশে ভৈলা জাত।
- সুকোমল শরীর সুন্দর ভরি হাত॥
- তয়ো গৈলি বিক্রয় জীবন ধিক ধিক।
- আউর কিবা দেখিয়াছো প্রাণ নযাই কিক॥ ৩১৬
- হা প্রাণেশ্বরী হা হা রোহিতাশ্চ পুত্র।
- তোমাসাক বান্ধিনেই কৈর সম দূত॥
- হেনয় অবস্থা ভৈল মোর কর্ম্ম ফলে।
- জীবো কিক লাগি আবে যাওঁ রসাতলে॥ ৩১৭
- এহিমতে কান্দি কান্দি রাজা আছে চাই।
- মহাদৈক পুত্রসমে দুইকো লৈয়া যাই॥
- বৃক্ষ গৃহ তাসম্বার আঁর যেবে ভৈলা।
- দুনাই পৃথিবীত পরি মুর্চ্ছাগত গৈলা॥ ৩১৮
- সেহি সময়ত বিশ্বামিত্র পাইল আসি।
- উঠ উঠ রাজা বুলি দিলন্ত উকাশি॥
- কিবা ধন পায়া আছা দিয়োক সম্প্রতি।
- শুনি চকমক করি উঠিলা নৃপতি॥ ৩১৯
- ভার্জ্যা পুত্র বিকি ধন পায়া আছে যত।
- তুপলি মেলিয়া দিলে ঋষিক হাতত॥
- অল্পধন দেখি ঋষি সন্তোষ নভৈল।
- শীঘ্র উঠি নৃপতিক বুলিবে লাগিল॥ ৩২০
- শুন অরে পাপীষ্ঠ অধম কুলাঙ্গার।
- এহিমানে অনুরূপ দক্ষিণা আমার॥
- ঋষিহেন বুলি তই আমাক নগনি।
- ক্ষুধাতুর জনে যাচ ভাতর পোতনি॥ ৩২১
- এহি ধন পাই তোক করিবোহো ক্ষমা।
- আজি মোর দেখ কেন তপর মহিমা॥
- লৈয়ো তেবে দেখ তেবে মোর ব্রহ্মবল।
- ঘোর চণ্ড শাপে সনে বংশ যাইবি তল॥ ৩২২
- হেন শুনি হরিশ্চন্দ্র তরতরি মনে।
- ভার্য্যা পুত্র বিকি ধন পাইলো এহিমানে॥
- দিবে আরু কিছু মোর নাহিকে সম্পত্তি।
- এতিক্ষণে ইটো ধন লৈয়ো মহামতি॥ ৩২৩
- বিশ্বামিত্রে বোলে আরু নকরিবা হেলা।
- এভো আছে দিবসর প্রহরেক বেলা॥
- এয়োবেলি খানি থাকিবোহো বাট চাই।
- আরু কিছু নবকিবি মোক মহারাই॥ ৩২৪
- এহি বুলি কপিঙ্গত বান্ধি লৈলা ধন।
- কোপ মনে বিশ্বামিত্র করিলা গমন॥
- চিন্তা ভয়ে রাজার দগধ ভৈল মন।
- শ্রুতি জ্ঞান নাই আর হরিল চেতন॥ ৩২৫
- দুখর উপরে দুখ পাইলা মহারাই।
- শরীরত মহাচিন্তা অগণি উধাই॥
- নেদেখো উপায় আরু আবেসে মরণ।
- বিশ্বামিত্র সাগরত নভৈল তরণ॥ ৩২৬
- গুণি গাণ্ঠি আন একো নেদেখো প্রকার।
- আপোনাক বিকি শুজোঁ আপোনার ধার॥
- এহিমতে কতোক্ষণ দঢ়াই আপোনাক।
- অধোমুখ হৈয়া রাজা দিলা দীর্ঘ ডাক॥ ৩২৭
- আপোনাক বিকো হেরা যার আছে মন।
- ভৃত্য করি কিনি লোবা আনিদিয়া ধন॥
- যাবে নতু আসি হোবে সূর্য্য অস্তাগত।
- সত্ত্বরে বোলাহা আসি মোহোর আগত। ৩২৮
- এহি বুলিবারে বারে ডাকন্ত নৃপাল।
- শুনি ভয়ঙ্কর এক আসিল ছাণ্ডাল॥
- যেন অঙ্কারর বর্ণ জ্বলে কলেবর।
- অন্ধ কূপ যেন জ্বলে নাসিকা বিবর॥ ৩২৯
- ডাঙ্গর দুগোটা চক্ষু দেখি ভয়ঙ্কর।
- বিকট দশন রাজা অগ্র অগ্রসর॥
- ফাল্গুণর বায়ু যেন নাকর বতাস।
- ওলমিছে পেট যেন বড় মৌর বাঁস॥ ৩৩০
- মেঘর গর্জ্জন যেন মুখত শুনি মাত।
- ভেঙ্গুরা থুলন্তর ভরি হাত॥
- তাম্র বর্ণ গোফ দাড়ি লোহা অলঙ্কার।
- হাতে জাঠি ধরি যেন রাক্ষস আকার॥ ৩৩১
- অনেক চাণ্ডাল গণে বেঢ়ি আছে তাক।
- মই কিনিবোহো বুলি মাতিলা রাজাক॥
- কত ধন লাগে তোক কহ মুল দর।
- কিবা অল্প লাগে কিবা লাগয় বিস্তর॥ ৩৩২
- ঢলো পড়ো করে আতি মদ্য আছে লাগি।
- অনুত্তর করি নৃপতিক মাতে রাগী॥
- কীল কীল করি উন্মত হুয়া হানে
- ভেল ভেল করিয়া মদ্যর গন্ধ আসে॥ ৩৩৩
- হেন দেখি রাজা দিলা নাকত কাপোর।
- তোরা কোন জাতি বুলি সোধে নৃপবর॥
- কিবা নাম তোমার সত্বরে কহিয়োক।
- চাণ্ডাল বদতি তই কিবা সোধ মোক॥ ৩৩৪
- জাতিত চাণ্ডাল থাকো প্রবীর পুরত।
- বঞ্চবধক নামে মই প্রক্ষাত লোকত॥
- মৃত কর বস্ত্র মানে মোর অধিকার।
- শুনি নৃপতির ভৈল হৃদয় বিদার॥ ৩৩৫
- রাজায়ে বোলন্ত তই উলটিয়া যাস।
- প্রাণাধিকে নহো মই চাণ্ডালর দাস॥
- শাপ অগণিত মরো সেই মোর ভাল।
- কোননো পাপিষ্ঠে হইবে চিতনি চাণ্ডাল॥ ৩৩৬
- সেহি সময়ত বিশ্বামিত্র পাইলা আসি।
- তবধ নয়নে ক্রোধ দণ্ডক উল্লাসি॥
- রাজাক বোলন্ত অরে শুন মহীপাল।
- দিবেক বিস্তর ধন গৃহস্থ চাণ্ডাল॥ ৩৩৭
- পাইবো মই বহুধন চাণ্ডালে যদি কিনে।
- অল্পসে দিবেক ধন কিনিলে সজ্জনে॥
- হেন জানি চাণ্ডালত যাইয়ো বিক্রয়।
- মোর যেবে শাপক তোহোর আছে ভয়॥ ৩৩৮
- দুলড়ী
- শুনি হরিশ্চন্দ্র ঋষিক বোলন্ত
- শরণ লৈলো তোমাত।
- ভু্ঞ্জিলো পৃথিবী আছিলো নৃপতি
- সূর্য্যবংশ ভৈলোজাত॥
- কোন সতে ভৃত্য হুইবো চাণ্ডালর
- ইটো সবে গরিহিত।
- কুলীনর ঠাই আমাক বিকাই
- লৈয়ো দক্ষিণার বিত॥ ৩৩৯
- শুনি বিশ্বামিত্র ক্রোধে উঠলি
- হাওরে পাপী দুর্জ্জন।
- মোর মন পুরি দক্ষিণা দিবাক
- তোহোর নাহিকে মন॥
- যেবে চাণ্ডালত বিক্রয় নযাস
- যেবে ধন নেদ তার।
- এতিক্ষণে হেরা শাপি ভস্মকরো
- নাহিকে দোষ আমার॥ ৩৪০
- শুনি হরিশ্চন্দ্র বিহ্বল ভৈলন্ত
- সমস্তে প্রাণ উড়িল।
- ত্রাহি ত্রাহি বুলি নিঢালে সমুলি
- ঋষির পাবে পরিল॥
- চরণত ধরি করন্ত কাতর
- হুয়োক ঋষি প্রসন্ন।
- শোকে বিমহিত ভৈলহো বিস্মিত
- দিয়োক মোক শরণ॥ ৩৪১
- চাণ্ডালত মোর জাতি ভ্রষ্টহৌক
- তোমারেসে ভৈলো দাস।
- নকরা বিঘিনি তুমি লোবা কিনি
- দক্ষিণাতে লৈয়ো দাস॥
- যেহি লাগে সেহি বহন করিবো
- ফুরাইবো কান্ধত করি।
- কাম্পয় হৃদয় দিয়োক নির্ভয়
- থাপিয়োক মোত ভরি॥ ৩৪২
- তথাপিতো ঋষি নিষ্ঠুর বোলন্ত
- ভরির এর নিলাজ।
- টেটোন পালক কি করিবো তোক
- ধনতেসে মোর কাজ॥
- তয়ো দাস ভৈলে মোর অধিকার
- কি করিবো তোক নিয়া।
- নিয়োক চাণ্ডাল আক বিকো আমি
- দশ কোটী ধন লৈয়া॥ ৩৪৩
- হেন শুনি ভৈল চাণ্ডাল হরিষ
- উলস মালস মন।
- ঋষিক বুজায়া ভারে ভারে আনি
- দিলে দশ কোটী ধন॥
- ঋষির ভরির পরা নৃপতিক
- আজুরি আনিলা ধরি।
- পাপীষ্ঠ চাণ্ডাল লগাইল ঘঞ্চাল
- বান্ধি পাছ হাত করি॥ ৩৪৪
- যেন খন্ত চোর পাকল নৃপতিক
- চাণ্ডালে করয় দণ্ডা।
- যাস যাস বুলি মারন্তে লৈযাই
- উলটা যাঠির খণ্ডা॥
- কতো দণ্ড ধরি পিঠিতে কোবাবে
- বিশ্রুতি ভৈলা নৃপতি।
- একে ভার্য্যা পুত্র বিয়োগ দগধ
- আপোনারো হেন গতি॥ ৩৪৫
- এহি মতে মারি ধরি নৃপতিক
- আপোনারো গৃহক নিল।
- দণ্ডি করি পাছে মরার ওপরে
- কাম চাহিবাক দিল॥
- মৃতকর বস্ত্র দিবি আনি আরু
- যি পাস চিতা সজালি।
- মহা কষ্টে দুখে নৃপতি থাকিলা
- তাহার আদেশ পালি॥ ৩৪৬
- আপোনার অন্ন চাণ্ডালে নেদয়
- ঘিণে মরিবেক বুলি।
- আঠে চারি তার দণ্ডিত ভূঞ্জন্তে
- যুড়িয়া নব পাতলি॥
- চাণ্ডালর ঘরে বঞ্চন্তে রাজার
- দণ্ডে এক যুগ যাই।
- ভার্য্যাক পুত্রক সুমরি সদাই
- কান্দে হরিশ্চন্দ্র রাই॥ ৩৪৭
- হরি হরি বান্ধৈ এবে হুইবে ভৈলা
- দুখতে মলিন মুখ।
- সর্ব্বক্ষণে শোক সুমরি নেরাব
- পুত্রর দেখিয়া দুখ॥
- বুলিবে নৃপতি আসিবন্ত পারা
- আমাক নিবে মেলাই।
- ইটো আঠান্তর একো নজানিলে
- যি ভৈল মোর বিলাই॥ ৩৪৮
- রাজ্য ত্যাগ ভৈল সুহৃদে এড়িল
- বিকিলো পুত্র ভার্য্যাকে।
- আপুনি চাণ্ডাল ভৈলো দাস আজি
- মোহর কর্ম্ম বিপাকে॥
- আবর কতেক ভুঞ্জিবো ললাট
- কোন গতি হোব মোর।
- কষ্টর উপরি কষ্ট দিয়ে আসি
- দুখরো নেদেখো ওর॥ ৩৪৯
- প্রভাত মধ্যাহ্ন গধূলি বেলাত
- এহিসে মুখর গীত।
- চক্ষুর লোতকে পাঞ্জরি ভিজই
- নিদ্রা নাশে রজনীত॥
- মৃতকর বস্ত্র যিদিনা নপান্ত
- চাণ্ডালে ধরিয়া মারে।
- এহি মতে রাজা চাণ্ডালর ঘরে
- বঞ্চিলা দুখ নিকারে॥ ৩৫০
- মহাদৈরো তৈতে দণ্ডে যুগ যাই
- বৃ্দ্ধ ব্রাহ্মণর ঘরে।
- আঠে চারি পাঞ্চে দিনেক ভুঞ্জন্তে
- সিয়ো মরণক ডরে॥
- ভুমিত শয়ন মলিন বসন
- ঢুলাবে জটিল কেশ।
- মহাদই বুলি চিনন নযাই
- ভৈলন্ত মলিন বেশ॥ ৩৫১
- খাইবাক নপাই কুমর শুকাই
- দুখীর যেন ছবাল।
- আগক যাহান্তে ব্রাহ্মণ কুমারে
- তাতেসে নলাগে মিল॥
- টের করি চান্তে কুরূপ দেখাই
- মলিন বস্ত্র নিসন্ধি।
- দেখি পটেশ্বরী ক্রন্দন করন্ত
- পুত্রক গলত বান্ধি॥ ৩৫২
- মই দুখিনীর পেটত পুতাই
- উপজিলি কিক লাগি।
- তোর দুখ দেখি কেনে প্রাণ ধরো
- নগৈল হৃদয় ভাগি॥
- হা প্রাণনাথ তোমাকেসে লাগি
- সর্ব্বক্ষণে ধুম পিওঁ।
- আমাক পেলাইবে আসিবাক পাবা
- এহিসে আশাত জীওঁ॥ ৩৫৩
- পুত্রে বোলে মাব পিতৃ আসিবন্ত
- ওলাই চাই থাকা বাট।
- আপাদ আন্ধারে পোহর নেদেখো
- কতেক দুঃখ ললাত॥
- হরি হরি প্রভু ভালে কি আছন্ত
- মোর দুখ আছা চাই।
- নজানো বিধতা তোমাক করিলে
- আরু বা কোন বিলাই॥ ৩৫৪
- মহা দুঃখ ডর কিমতে সহিবো
- আমাক পাইলেক অন্তে।
- হা প্রভুদেব জানো প্রাণ যাই
- তোমাক নতু দেখন্তে॥
- আউর ইটো জন্মে দেখিতে নপাইবো
- প্রভুর দুই চরণ।
- ইসে মহা দুখ মই অবিহনে
- পুত্রর হুইবে মরণ॥ ৩৫৫
- এহি মতে শান্তী সদায়ে কান্দন্ত
- লোতকর নাহি ছেদ।
- অগ্নির সদৃশ শরীর শোশয়
- হিয়ার নুগুছে খেদ॥
- হেনয় নিকরে আছন্ত সুন্দরী
- ব্রাহ্মণর হুয়া দাসী।
- রাজ কুমরক ফুল পারিবাক
- বুলিলা এদিন ঋষি॥ ৩৫৬
- ব্রাহ্মণ বচনে রাজার কুমরে
- হাতে কুকী গোট লৈয়া।
- ফুলনি বাড়ীতে সোমাই কুমরে
- ফুল পারে দাঁরি নিয়া॥
- সেহি ফুল গাছে কাল সর্প আছে
- উপরক তুলি ফেট।
- কুমরক ক্রোধ করি মহা সর্পে
- মাথাত মারিল খোট॥ ৩৫৭
- বিষর পরশে থর থর কম্পি
- কুমরর প্রাণ গৈল।
- বুড়িল বুড়িল বুলি পটেশ্বরী
- পুত্রশোকে আউল ভৈল॥
- দুহাতে ধরিয়া মুঠি হানে হিয়া
- হাহা পুত্র পুত্র বুলি।
- মোক যাস এড়ি শোকে পারে গেড়ি
- মরিলো আবে সমুলি॥ ৩৫৮
- মোহোর পুতাই কোনে লৈয়া যাই
- গর্ভত জালিয়া জুই।
- হরি হরি বিধি কতনো মারস
- মোক শোক শেলে খাই॥
- রোহিতাশ্ব বাপ তোহোর সন্তাপ
- কৈকনো গৈলে এড়াওঁ।
- দয়ার কুমর আমাক সুমর
- লগে যমপুরে যাওঁ॥ ৩৫৯
- কাক গলে বান্ধি জুইয়ো হাবিয়াসে
- কাহার চাহিবো মুখ।
- মোক কোনে আসি আই আই বুলি
- পাহরাইবে সবে দুঃখ॥
- এহি বুলি সতী পরন্ত মাটিত
- কান্দি আর্ত্তনাদ করি।
- হেন দেখি আসি ব্রাহ্মণে বোলয়
- হাতত টোকোন ধরি॥ ৩৬০
- হাওরে পাপিষ্ঠি কিসক কান্দস
- খুণ্ডাত ভাঙ্গিবো গাল।
- ভাল ভৈল তোর মরিল পুতের
- গুছিল আল জঞ্জাল॥
- আক কোনে আবে খরিরে পুরিব
- গঙ্গাত নিয়া পেলাও।
- শুনি মহাদই দান্তে খের লই
- করিলন্ত কাউ বাউ॥ ৩৬১
- দেখিয়া ভর্চ্ছিয়া মাতিলা ব্রাহ্মণে
- এড়াইলি এড়াইলি বুলি।
- শুনি শৈব্যা পাছে মৃতক পুত্রক
- লৈযান্ত কোলাত তুলি॥
- গঙ্গার তীরক কান্দন্তে লড়িলা
- জ্বলিল পুত্র সন্তাপ।
- কুমরর গুণ বিনাই কান্দন্ত
- যাহান্তে করি বিলাপ॥ ৩৬২
- নমো নমো হরি গুছায়ো সংহরি
- সংসারর দুঃখ ভার।
- কৃষ্ণর কিঙ্করে রছিলা শঙ্করে
- দুলড়ী ছবি পয়ার॥
- শুনা সর্ব্বলোকে হিত চিন্তিয়োক
- আসনত সুখে থাকি।
- পাপক সংহরি পুরুষ উদ্ধারি
- হরি হরি বোলা ডাকি॥ ৩৬৩
- পদ
- হরি হরি বোলা ডাকি॥ ৩৬৩
- পক্ষিগণ বোলে মুনি শুনি থাকা কথা।
- কহো নৃপতির পাছে যিভৈল অবস্থা॥
- এহি মতে মরা পুত্র শৈব্যা কোলে ধরি।
- পথত কানদিয়া যান্ত আর্ত্তনাদ করি॥ ৩৬৪
- কৈক গৈলি পুতাই তই দুঃখিনীক এরি।
- কি মতে রহিবো মই ব্রাহ্মণর চেড়ী॥
- কৈত আছা হরিশ্চন্দ্র মোর প্রাণপতি।
- তুমি অবিহনে ভৈলো অনাথ সঙ্গতি॥ ৩৬৫
- তব দয়াবন্ত কুমরক খাইলে সাপে।
- শুনি কিবা জীবা তুমি পুত্রর সন্তাপে।
- মোক প্রভু কিয় আসি নকরা আশ্বাস।
- পুত্রর লগতে অগণিত করো যাস॥ ৩৬৬
- এহি বুলি দীর্ঘ রাবে করন্ত ক্রন্দন।
- সেহি বেলা হরিশ্চন্দ্র ত্রিশঙ্ক নন্দন॥
- চাণ্ডালে পঠাইলে মৃতকক ফুরি চান্ত।
- ক্রন্দনর রবেক দূরতে নিহালন্ত॥ ৩৬৭
- মরিল মনুষ্য আনে পূড়িবাক প্রতি।
- লবরন্ত লাগ আসি ধরিলা নৃপতি॥
- কঙ্কালত লাঙ্গতি কান্ধত কোর পারি।
- বিকৃত চাণ্ডাল বেশ চিনিবে নোবারি॥ ৩৬৮
- ধূলায়ে জটিলা ভৈলা আউল সবে কেশ।
- মহা কৃষ্ণ বর্ণ ভৈলা পিশাঞ্চর বেশ॥
- ডাড়ি গোফ ভোবোকার দেখি আসেবান্তি।
- স্বামী হেন বুলি তাঙ্ক নিচিনিলা শান্তি॥ ৩৬৯
- চিনিবাক নোবারিলা রজায়ো ভার্য্যাক।
- অপেশ্বরা গণো রূপে নাতিল যাহাক॥
- রত্নর শলকাগণ আঙ্গলির পান্তি।
- তপ্ত সুবর্ণর বর্ণ শরীরর কান্তি॥ ৩৭০
- সিটো তনু শুখাই সবে ভৈল চারখার।
- পরিল বিবর্ণ যেন বিকৃত আকার॥
- শরীরর বস্ত্র আতি পরে টোপে মলি।
- যেন ভিখারীর নারী ধীরে যান্ত চলি॥ ৩৭১
- কতো বেলি পাইলা গৈয়া ভাগীরথি তীর।
- দুঃখ শোক শান্তীর শরীর নোহে থির॥
- কুমরর শরীরক কানি খানি পারি।
- মৃতক পুত্রক শুবাবন্ত বর নারী॥ ৩৭২
- তার মুখে মুখ দিয়া করন্ত বিলাপ।
- সহিবে নোবারো বাপ তোহোর সন্তাপ॥
- কিসক নমাত মোক আই আই বুলি।
- তোর শোক অগণি মারন্তে আছে পুলি॥ ৩৭৩
- এবেসে জানিলো তই পুত্র গৈলি মরি।
- এহি বুলি মাটিত পড়িলা ধাত করি॥
- অচেতন ভৈলা মাত বোল নাহি দেখি।
- মৃতক শিশুক রাজা চাহন্ত নিরীক্ষি॥ ৩৭৪
- গাত সবে আছৈ নৃপতির যত চিহ্ন।
- মহা সুলক্ষণ একো অঙ্গ নুহি হীন॥
- অনুমানে জানো এক রাজার ছবাল।
- কিবা দোষে ইহার অল্পতে ভৈল কাল॥ ৩৭৫
- আক দেখি হৃদয়ত কিয় লাগে তাপ।
- এহি বয়সর মোর রোহিতাশ্ব বাপ॥
- এনয় আয়ত দুই কমল লোচন।
- এহি মুখ কর্ণ নাসা কপাল দর্শন॥ ৩৭৬
- সমান শরীর একে অবস্থা আকৃতি।
- নজানো ব্রাহ্মণে কিনি নিলে কোন ভিতি।
- এবে হুইবে উমলান্তে ফুরৈ রঙ্গ করি।
- যদি নতু যমে নেই পুতাইক পাসরি॥ ৩৭৭
- হরি হরি শিশু ইটো কাহার নন্দন॥
- হা পুত্র শোকে তোর কি করে জীবন।
- এহি বুলি রাজা ভৈল সজল নয়ন॥ ৩৭৮
- অধোমুখে থাকিলন্ত পুত্রক সুমরি।
- দুনাই চেতন লাভ কান্দন্ত সুন্দরী॥
- হা সুকুমার পুত্র সর্ব্ব সুলক্ষণ।
- কোনবা কুযোগ আসি মিলিল মরণ॥ ৩৭৯
- সর্ব্বাঙ্গে সুন্দর যেন সোণার পুতলি।
- মোক এরি পুত্র আবে কোন পূরী গৈলি॥
- জীয়ো মানে থলি পুতাই হৃদয়ত শাল।
- আপুনি করিবো আজি আপোনার কাল॥ ৩৮০
- হা প্রাণনাথ হরিশ্চন্দ্র গৈলা কোই।
- তোমার স্নেহর হেরা মরে মহাদই॥
- কিয়নো আশ্বাস আবে নকরাহা মোক।
- পরিচ্ছেদ চাহা আসি রোহিতাশ্ব পোক॥ ৩৮১
- প্রাণ পুত্র কৈকগৈলা ইজন্মক লাগি।
- একেশ্বরী ভৈলো কুলক্ষণী মন্দভাগী॥
- হা বিধি ভৈল আবে তোর মনে সুখ।
- নৃপতিক দুঃখর উপরি দিলি দুখ॥ ৩৮২
- রাজ্য উচ্ছেদ ভৈল এড়িল সুহৃদে।
- ভার্য্যা পুত্র বিকা গৈল দক্ষিণার পদে॥
- মহারাজ ঋষি হরিশ্চন্দ্র মহীপতি।
- নকরিলা বিধতাই কোননো দুর্গতি॥ ৩৮৩
- সিটো প্রাণনাথর নেদেখো আবে ভাল।
- প্রাণে কি জীবয় নুশুনিলো একতাল॥
- জানো প্রভু মোর শোকে দুঃখে গৈল মরি।
- এহিবুলি মুচ্ছাগৈয়া পড়িল সুন্দরী॥ ৩৮৪
- হেন শুনি নৃপতির বিস্ময় মনত।
- কিবা সচেতত আছো কিবা স্বপোনত॥
- কৈর নারী কান্দৈ ইটো মোর নাম লই।
- এহেন্তেসে জানো মোর শৈব্যা মহাদই॥ ৩৮৫
- জানো প্রাণ পুত্র রোহিতাশ্ব আছৈ মরি।
- জানিলা নিশ্চয় রাজা কাতি চিত্ত করি॥
- শোকে ধরিলেক ভৈল বাতুল স্বভাব।
- পুত্র পুত্র বুলিয়া ত্যজিলা দীর্ঘরাব॥ ৩৮৬
- দশোদিশ অন্ধকার দেখি সেহিকালে।
- পুত্রর ভরিত রাজা পড়িলা নিঢালে॥
- কতোক্ষণে শরীরত আসিল চেতন।
- আকুলে ব্যাকুলে রাজা করন্ত ক্রন্দন॥ ৩৮৭
- মহাশোকে হিয়ে ভুকু মারি নরনাথ।
- হাপুত্র বুলি কতো আস্ফালন্ত মাথ॥
- কতো উঠি উঠি রাজা পড়ন্ত আছারে।
- কদলি বৃক্ষক যেন বাতাসে উৎপারে॥ ৩৮৮
- পুত্র মুখে মুখ দিয়া করন্ত বিলাপ।
- কিমতে এড়াইবো আবে তোহোর সন্তাপ॥
- ইটো চক্ষু মুখ নাসা কপোল দেখন্তে।
- হিয়া পুটি নযাই প্রভু আছোহো জীবন্তে॥ ৩৮৯
- কোনে খেদি আসিবেক মাতা মাতা বুলি।
- হৃদয় আন্দোলে কাক কোলে লৈবো তুলি॥
- কার ধুলি মাটি মোর লাগিবে কোলাত।
- ভোক লাগে বুলি কোনে লগাইবেক মাত॥ ৩৯০
- মোহোর কোলাত কোনে যুড়িবেক বান্ধি।
- কোননো মুখত চুম্বা দিবো গলে বান্ধি॥
- প্রাণতো অধিক মোর স্নেহর পুতাই।
- কৈক যাস মোক শোক সাগরে পেলাই॥ ৩৯১
- মৎস্য যেন তোক মই বিকিলো পাপীষ্ঠে।
- সেহি কষ্টে মোক জানো এড়ি গৈলা নিষ্ঠে॥
- হা বিধি এতেক করিয়া ক্ষমা নাই।
- সর্প হৈয়া খাইলে মোর পুত্রক দুনাই॥ ৩৯২
- যতেক সর্ব্বস্ব রাজ্য ভার মোর গৈলা।
- একেশ্বর ভৈলো পুত্র ভার্য্যায়ো রৈলা॥
- আপুনি চাণ্ডাল ভৈলো গৈল জাতি কুল।
- সবেও নভৈল পুত্র সন্তাপর তুল॥ ৩৯৩
- কোন দৈবে খাইলে কুমরক সর্প হুই।
- মোক খাহা আমি এড়াওঁ পুত্র শোকে জুই॥
- এহি বুলি নৃপতি কান্দন্ত হুক হুকি।
- কৈক গৈলা রোহিতাশ্ব বুলি দেন্ত উকি॥ ৩৯৪
- মৃতক পুত্রক হৃদয়ত ধড়ি তুলি।
- নিঢালে পড়িলা দুনাই পুত্র পুত্র বুলি॥
- সহিবে নোবারি রাজা শোকর ঝমক।
- হরিল চেতন যেন দেখিল যমক॥ ৩৯৫
- নাহি মাত বোল থাকিলন্ত মূর্চ্ছা গই।
- হেন দেখি বিস্ময় ভৈলন্ত মহাদই॥
- কৈর গোটে কান্দৈ কুমরক আঙ্কোবালী।
- বিলাপ এড়িয়া শৈব্যা চাহান্ত নিহালি॥ ৩৯৬
- হরিশ্চন্দ্র নৃপতির শুনো যেন মাত।
- তেনয় আকার সুবলিত ভরি হাত॥
- নিশ্চয় জানিলো মোর হোবে প্রাণনাথ।
- তাহানেসে দেখো ইটো ছত্রাকৃত মাথ॥ ৩৯৭
- সেহিসে উন্নত নাসা যেন তিল ফুল।
- প্রভুর দশন দেখো কুন্দ কুড়ি খুল॥
- পদ্মসম লোচন কুঞ্চিত নীল কেশ।
- বহল হৃদয় সিংহ বন্ধ কটিদেশ॥ ৩৯৮
- ললিত বলিত সেহি আঙ্গুলির পান্তি।
- চন্দ্র বিম্ব সম নুহি সেহি নখ কান্তি॥
- এহেন্তেসে নৃপতি জানিলো নিস্ত করি।
- ভালেতো কান্দন্ত কুমরক গলে ধরি॥ ৩৯৯
- এক মনে বোলো যদি রাজা স্বরূপত।
- কিসক ফুরন্ত ইটো শ্মশান শালত॥
- হাতে কোর খানি দেখো চাণ্ডালর নয়।
- এহি বুলি শৈব্যা শান্তী ভৈলন্ত বিস্ময়॥ ৪০০
- কিবা কুলক্ষণ আছে বুলি বিচারন্ত।
- মস্তকর পরা তান চরণ পর্য্যন্ত॥
- সকলো অঙ্গক শান্তী চাহান্তা নিরেক্ষী।
- আছন্ত এগোটা রেখা ভরি তলে দেখি॥ ৪০১
- মহা কৃষ্ণবর্ণ আতি নিন্দিত সাক্ষাত।
- চাণ্ডাল হুইবেক হেন রেখা আছৈ তাত॥
- তাক দেখি শান্তী অতি ভৈলা বিমোহিত।
- তমোময় দেখিয়া পড়িলা পৃথিবীত॥ ৪০২
- কতো বেলি সন্ধুকিয়া গদ গদ মাত।
- অধোমুখ ভৈলন্ত গালত দিয়া হাত॥
- সর সরি পরৈ লোহ করন্ত বিষাদ।
- ধিক্ ধিক্ বিধি তোর হেনসে মর্য্যাদ॥ ৪০৩
- দুতি ইন্দ্র যেন হরিশ্চন্দ্র মহীপাল।
- ইহাঁক করিলে আনি অধম চাণ্ডাল॥
- ধিকার আছোক তোর দারুণ হৃদয়।
- যতেক বিহিত তোর সকলে বোলয়॥ ৪০৪
- রাজ্যর খেদাই কৈলা চাণ্ডালর বেশ।
- বিকাইল ভার্য্যা পুত্র দক্ষিণা উদ্দেশ্যে॥
- এতেকে অবস্থা দিয়া নাতিল রাজাক।
- চাণ্ডাল করিলে নিয়া কোননো বিপাক॥ ৪০৫
- হরি হরি কিনো ইটো পরম অদ্ভুত।
- পরম আশ্চর্য্য আবে মিলিল গবত॥
- কৃষ্ণর কিঙ্করে পদ ভণিলা শঙ্করে।
- ডাকি হরি হরি বোলা লোক নিরন্তরে॥ ৪০৬
- ছবি
- স্বামীর অবস্থা দেখি পতিব্রতা মহাদৈর
- শোকানল জ্বলৈ নিদারুণ।
- নপান্ত চেতন জ্ঞান দহয় সমস্ত প্রাণ
- পুত্রর সন্তাপে দশগুণ॥
- বুক যেন যাই ফুটি ধরিবে নোবারি উঠি
- নৃপতির গলত বান্ধিল।
- বর্ণাই বর্ণাই গুণ অনেক করুণ্য করি
- দুঃখ চাই অনেক কান্দিল॥ ৪০৭
- হরি হরি মহারাজ প্রাণর বল্লভ মোর
- সাতো পৃথিবীর অধিপতি।
- কিছু নোহে বেদ ধর্ম্ম হেন কিয় যুগ কর্ম্ম
- তুমি ভৈলা চাণ্ডাল সঙ্গিত॥
- দুঃখ মোর দহে দেহা মাথা তুলি মোক চোবা
- তযু মহাদই মরে কান্দি।
- পাহরিলা মোর নেহা এরিলাহা পূর্ব্ব স্নেহা
- আশ্বাস নোবোলা গলে বান্ধি॥ ৪০৮
- সর্ব্ব সৌভাগিনী নারী পৃথিবীত আছো পরি
- মোক শোক শেলে আছে শালি।
- আজি প্রভু দেব কেনে সুবর্ণর সিংহাসনে
- নোতোলাহা মোক আঙ্কোবালী॥
- হরি হরি প্রভু দেব কিসক কেবল গাব
- শুতিয়াছা কেবলে ভূমিত।
- নেদেখোহো ছত্রদণ্ড নুশুনোহো বাদ্য ভণ্ড
- আগত নকরৈ নৃত্য গীত॥ ৪০৯
- পয়ানব বেলা যার সেনার নেদেখে পার
- হয় হস্তী রথ যাই যুড়ি।
- বাদ্য ভণ্ড কোলাহল কর্ণত হানয় তাল
- পাতাল পুরত লাগে হুড়ি॥
- নদী সব উঠে পঙ্ক স্বর্গত লাগয় ঢঙ্ক
- শত্রুর যাইবাক পুরী নাই।
- সিনো শ্রী কৈক গৈল হেন সে বিপত্তি ভৈল
- শ্মশানত ফুরে মহারাই॥ ৪১০
- আগুয়ান বেলা যাক মহা মহা রাজা ঝাক
- সঘনে ধরয় সবে আল।
- হাতে শেল শূলধরি ফুরে সবে দম্ভ করি
- রিপুর মধ্যত যেন কাল॥
- কতো ছত্র ধরৈ মাথে কাহারো ভৃঙ্গার হাতে
- কোহো করে চামরে বতাস।
- কোন বিধি বিপর্য্যয় দহে দেহা অতিশয়
- হেন রাজা চাণ্ডালর দাস॥ ৪১১
- সিংহাসনে থাকা চড়ি মহা পাত্রগণে বেঢ়ি
- থাকে যেন ইন্দ্রক ত্রিদশে।
- স্বর্গ মর্ত্ত্য রসাতলে যাক সমে নাহি বলে
- জগত ব্যাপিল যার যশে॥
- বুদ্ধি বৃহস্পতি সম আছিলাহা নরোত্তম
- কোন দৈবে দিলেক আপদ।
- মৃতকক চোবা আসি শ্মশানত থাকা বসি
- কাক গৃধ আবে সভাসদ॥ ৪১২
- শবর মাংসক গিলি পিশাচর কিলাকিলি
- যক্ষ রক্ষগণে চমৎকার।
- নাড়ী মুণ্ড ভণ্ড ছয় শুনিতে কর্দ্দমময়
- চিতা ধুমে দেখি অন্ধকার॥
- শৃগালর ঘোর রাব শুনি শিহরিল গাব
- শবদে লাগয় কর্ণে-ত্রাস।
- হরি হরি হরিশ্চন্দ্র পৃথিবী লোকর ইন্দ্র
- এবে ভৈল এই স্থানে বাস॥ ৪১৩
- এহি বুলি পটেশ্বরী স্বামীর গলত ধরি
- করিলন্ত বিষাদ অশেষ।
- উঠিয়োক মহারাজ স্বরূপ কহিয়ো কাজ
- কেনে ভৈলা চাণ্ডালর বেশ॥
- তোমার অবস্থা যিবা স্বরূপত দেখো কিবা
- কিবা দেখিয়াছো স্বপনত।
- ইয়ো যেবে হোয়ৈ সঞ্চা তপ জপ সবে মিছা
- আউর ধর্ম্ম নাহি সংসারত॥ ৪১৪
- স্বপ্নতো তোমার মতি পাপত নাহিকে রতি
- পরম বৈষ্ণব রাজ ঋষি।
- আত মই মরো মর্ম্মে মহা যজ্ঞে দান ধর্ম্মে
- সহায় নভৈল কোহো আসি॥
- হেন শুনি নৃপবর শোকে দহে কলেবর
- কান্দিল শৈব্যার গলে ধরি।
- গড়াগড়ি পৃথিবীত কতো বেলি ধরিচিত
- স্তম্ভ হৈয়া রাজা পটেশ্বরী॥ ৪১৫
- যিমতে চাণ্ডাল ভৈয়া ভার্য্যাত কহিবে লৈলা
- নিশ্বাস তেজিয়া নৃপবর।
- শৈব্যায়ো কহিলা তাপে যেন মতে খাইল সাপে
- যেন মতে মরিল কুমর॥
- নৃপতি বোলয় প্রিয়া নসহে আমার হিয়া
- আপদর নেদেখোহো পার।
- কেবলেসে আছে প্রাণ নষ্টভৈল শ্রুতিজ্ঞান
- দশোদিশ দেখো অন্ধকার॥ ৪১৬
- দুখ ভূঞ্জি নপাওঁ ওর মরণর পার মোর
- উপায় নেদেখো মই আন।
- কিন্তু মই পরাধীন চাণ্ডালর ঘরে ঋণ
- কেনমতে এড়ো আবে প্রাণ॥
- চাণ্ডালত নুশুধিয়া যেবে মই মরো গৈয়া
- জলত বহ্নিত করি যাস।
- নরকত কাল খপি উপজিয়া পুনরপি
- এহি চাণ্ডালর হৈবো দাস॥ ৪১৭
- অনেক যাতনা পাইবো রৌরব নরকে যাইবো
- ছেদিবেক আসি পত্র বনে।
- হাত ভরি বান্ধি নিয়া মাথাত করত দিয়া
- ছিড়িবে যম দূতগণে॥
- যতেক নরক আছে সবাহাঙ্কে ভূঞ্জি পাছে
- চাণ্ডালরো হইবো অধিকার।
- এবে কোন বুদ্ধি করো কিবা জিওঁ কিবা মরো
- চিন্তা সাগরর নপাওঁ পার॥ ৪১৮
- শুনা বান্ধৈ মহাদই পুত্রর সন্তাপে মই
- জীবাক নাহিকে মোর মতি।
- নরককো দিয়া পিঠি মরিবোহো নিস্তে নিস্তি
- পাছে যেন লাগে হোক গতি॥
- চৌরাশী নরক ঘোর পুত্রর সন্তাপে জুর
- কেহো নুহি কহিলো সাক্ষাত।
- যার গাবে ভৈল তাপ সি কি আরু চাবে পাপ
- যেনেতেনে করো আত্মাঘাত॥ ৪১৯
- এখানে সাজিবো চিতা পুত্রক তুলিয়া তথা
- জালিবো অগনি যত্ন করি।
- প্রাণকো এড়িবো তাত বহ্নিত করিবো যাস
- পুত্ররো লগতে যাইবো মরি॥
- নবাধিবা বান্ধৈ মোক এড়াওঁ ইটো মহাশোক
- আপোনার করো আজি কাল।
- এহি বুলি রাজা কান্দি ভার্য্যাক গলত বান্ধি
- অধোমুখ ভৈলা মহীপাল॥ ৪২০
- নমো নমো জগন্নাথ ভূমিত নমায়া মাথ
- চরণত করো নমস্কার।
- কৃষ্ণ পদ প্রসাদত সিদ্ধি হোক অভিমত
- পদ হৌক অশেষ প্রচার॥
- কায়স্থ শঙ্কর কবি পয়ারে রচিলা ছবি
- ছবি পদ চল নিগদিত।
- শুনিয়োক সর্ব্বলোক বৈকুণ্ঠক চলিয়োক
- হরি হরি বুলিয়া সম্প্রতি॥ ৪২১
- পদ
- পক্ষিগণে বোলে মুনি শুনা আত পরে।
- কতো বেলি স্তব্ধ হৈয়া রাজা অনন্তরে॥
- উঠিয়োকে প্রিয়া আবে শোক পরিহরি।
- ব্রাহ্মণর গৃহক চলিয়ো প্রাণেশ্বরী॥ ৪২২
- ধন দি কিনিলে দাসী ভৈল মহাদই।
- কেনমতে ব্রহ্মস্বক শুজিবা বান্ধই॥
- ঘোর ব্রহ্মস্বক সুমরন্তে লাগে ত্রাস।
- আছোক আমাক, দহিবেক আগ পাছ॥ ৪২৩
- যিবা জনে খাই বিষ তাক মাত্র মারে।
- ব্রহ্মস্বে দগধ করে পু্ত্র পরিবারে॥
- অন্যচারি ব্রাহ্মণর হরে তিল কুশ।
- দুর্ব্বার ব্রহ্মস্বে দহে একৈশ পুরুষ॥ ৪২৪
- চাণ্ডালর ঋণস্বক মোর নাহি ডর।
- ইহাকে বঞ্চিলে নষ্ট হুইবো একেশ্বর॥
- ব্রাহ্মণর ব্রহ্মস্বে সবংশে যাইবো তল।
- হেন জানি বান্ধই সত্বর করি চল॥ ৪২৫
- কদাচিতো ব্রাহ্মণক নুবুলিবা খর্ব্ব।
- আউর রাজ ভার্য্যা হেন নকরিবা গর্ব্ব॥
- আঠো অঙ্গ মারি দাসী ভাবে নিয়া কাল।
- দেব হেন বুলি ধরা ব্রাহ্মণর আল॥ ৪২৬
- উপদেশ বাণী প্রাণেশ্বরী তই শুন।
- মোর মুখে কতেক বর্ণাইবোঁ তোর গুণ॥
- তই হেন ভার্য্যা পাইলো কত জন্ম ভাগে।
- তোহোর কথাক আবে কি কহিবে লাগে॥ ৪২৭
- কর্ম্ম সময়ত তোক মন্ত্রী হেন লেখি।
- রঙ্গর বেলাত যেন তই প্রাণসখী॥
- স্নেহের প্রস্তাবে তই মাতৃ যেন ঠান।
- শয়ন বেলাত তই দাসীর সমান॥ ৪২৮
- কত তপসাই পাইলো তই হেন ভার্য্যাক।
- অতি অল্পকালে বিধি দণ্ডিলে আমাক॥
- করিবে নপাইলো অযোধ্যাত সুখ ভোগ।
- আজি হন্তে তোর মোর মিলিল বিয়োগ॥ ৪২৯
- কেলি কৌতূহলে আছিলিহি মোর পাশ।
- ক্রীড়াত করিলো তোক যিবা পরি হাস॥
- যেন ভৈল রঙ্গর সময় মন রোষ।
- এহি তোত সাধো তাত নধরিবি দোষ॥ ৪৩০
- আজি পরিচ্ছেদা তোর মোর দেখাদেখি।
- ইজন্মক লাগি মোক মেলি চোবা আঁখি॥
- থাকিয়োক বান্ধৈ মাতি যাওঁ যম পুর।
- পুত্রর আমার আশা আজি হন্তে দূর॥ ৪৩১
- শুনি মহাদইর ভৈল অন্তরীক্ষ প্রাণ।
- কতো বেলি শরীরত নাছিলন্ত জ্ঞান॥
- নসহে হৃদয় শোক পোরে ভক ভকি।
- স্বামী আগে পড়িয়া কান্দয় মক মকি॥ ৪৩২
- বজ্র সম বাণী কেনে বুলিলা নুগুণি।
- তুমিও জানিলা মই হেন নিদারুণী॥
- ধরিবে কি পারো প্রাণ পতি পুত্র শোকে।
- এত কদর্থনা কেনে করিলাহা মোকে॥ ৪৩৩
- দণ্ডেকো নেদেখি মোক নাছিল নিবাস॥
- মরণ বেলাত কেনে এরিবাক চাস॥
- হেনয় নিষ্ঠুর বাণী বোলা কোন সতে।
- হৃদয় বিদীর্ণ শোক সহিবো কিমতে॥ ৪৩৪
- স্ত্রী জাতি ভৈলে তার স্বামী জীব প্রাণ।
- স্বামীসে দেবতা যত তপ জপ ধ্যান॥
- হেন স্বামী মরিলে যি জনি নমরয়।
- বজ্রতো অধিক দেখো তাইর হৃদয়॥ ৪৩৫
- দণ্ডেকো নিজীবো প্রভো তুমি অবিহনে।
- কুলক্ষণি বিধবার কি করে জীবনে॥
- মই নেরো তথাপিতো প্রাণ যাই এরি।
- কোন মতে রহিবোহো ব্রাহ্মণর ছেরি॥ ৪৩৬
- সহগামী যাওঁ কর্ম্মে যেন যুবাই হোক।
- ধরিবে নোবারো এই মহা দুঃখ শোক॥
- হেন জানি প্রভো আরু নকরা নৈরাশ।
- তোমার লগতে করো অগণিত জাস॥ ৪৩৭
- রাজা বোলে বান্ধৈ তভো বোল এই বাণী।
- অগণিত পড়িয়া মরিবো তিনি প্রাণী॥
- উঠিলন্ত রাজা দিয়া এই সমিধান।
- গঙ্গাতীরে নির্ম্মলা বহল চিতাখান॥ ৪৩৮
- করন্ত সত্বর আতি মরিবাক লাই।
- আনিল সুকান কাষ্ঠ সব মহারাই॥
- কেতিক্ষণে প্রাণ যাইবে চিতে উত্রাবলে।
- স্নানিলন্ত গৈয়া দুয়ো নামি গঙ্গাজলে॥ ৪৩৯
- মৃতক পুত্রক গাব ধুবাইলন্ত আনি।
- গঙ্গাত স্নানিয়া উঠিলন্ত দুই প্রাণী॥
- পুত্রক চিতাত তুলি লগাইলন্ত জুই।
- সূর্য্যক নমিলা পাছে কৃতাঞ্জলি হুই॥ ৪৪০
- করোযোড়ে অগ্নিকো করিলা প্রদক্ষিণ।
- বিষ্ণুক চিন্তিয়া দুয়ো ভৈলা ভয়হীন॥
- প্রাণত নিস্নেহ হুয়া করি মন সাস।
- হরি হরি বলিয়া বহ্নিত দিলা জাস॥ ৪৪১
- উঠলিয়া গৈল বহ্নি গগণ শিখর।
- নেদেখয় তিনিয়ো প্রাণীর কলেবর॥
- দশোদিশে রোল উঠলিল হাহাকার।
- হা মহারাজা পুরি ভৈল চারখার॥ ৪৪২
- অশেষ প্রশংসা করে স্বর্গর দেবতা।
- সাধু হরিশ্চন্দ্র সাধু শৈব্যা পতিব্রতা॥
- বরষিল অসংখ্যাত কুসুম সুরভি।
- অন্তরীক্ষ ঢালি বাবে দেবর দুন্দুভি॥ ৪৪৩
- পূণ্যর প্রভাবে বহ্নি ভৈলা সুশীতল।
- দহিলন্ত সবে শরীরর মাত্র মল॥
- গুছিল কুবেশ তাসম্বার কলেবর।
- প্রকাশয় নির্ম্মল যেহেন শশধর॥ ৪৪৪
- সেহিবেলা ধর্ম্ম ইন্দ্র বিশ্বামিত্র ঋষি।
- করিলন্ত নৃপতিক প্রশংসা হরিষি॥
- ধন্য ধন্য হরিশ্চন্দ্র বড় যশ পাইলি।
- আথে বেথে বহ্নিক নুমাইল পানী ঢালি॥ ৪৪৫
- বাবে বিদ্যাধরে অপেস্বরা করে নৃত্য।
- ইন্দ্রদেবে শরীরত সিঞ্চিলা অমৃত॥
- দেখি আনন্দে পুত্রক আলিঙ্গিল॥ ৪৪৬
- বুকুত সাবটি করিলন্ত শির ঘ্রাণ।
- আঠ গুণ তেজ দশ গুণে ভৈলা প্রাণ॥
- সাবটিলা আনন্দে পুত্রক শৈব্যা শান্তী।
- মিলিল উৎসব সবে খণ্ডিলা দুর্গতি॥ ৪৪৭
- আপুনি পিন্ধাইলা ইন্দ্রদেবে অলঙ্কার।
- দেবাঙ্গ বসন মনুষ্যত অপ্রচার॥
- দিব্য পুষ্প চন্দনে ভুষিত কলেবর।
- ভৈলা হরিশ্চন্দ্র যেন দুতি পুরন্দর॥ ৪৪৮
- অপেস্বরাগণে আসি শৈব্যাক বেঢ়িলা।
- দিব্য বস্ত্র অলঙ্কারে শরীর মণ্ডিলা॥
- পারিজাত সিঞ্চিলা উজ্জ্বল ভৈলা কান্তি।
- করিলা দীপিতি অতি শৈব্যা মহাশান্তি॥ ৪৪৯
- কুমরক পিন্ধাইলন্ত দিব্য অলঙ্কার।
- খণ্ডিল আপদ বুলি দিলন্ত জোকার॥
- গাবে বাবে বিদ্যাধরে নাচে অপেস্বরা।
- সিদ্ধগণে প্রশংসন্ত আকাশর পরা॥ ৪৫০
- গন্ধর্ব্বে করিলা আতি দুন্দুভি সম্বাদ।
- নারদ প্রমুখে ঋষি দিলা আশীর্ব্বাদ॥
- ধন্য হরিশ্চন্দ্র যশ করিলা প্রক্ষাত।
- এহি বুলি শিরত সিঞ্চিলা পারিজাত॥ ৪৫১
- ধর্ম্মে আসি বোলন্ত নৃপতি উঠ উঠ।
- আমি ধর্ম্ম ইন্দ্র তযু কর্ম্মে ভৈল তুষ্ট॥
- দিব্য বিমানত আসি চড়িয়ো সম্প্রতি।
- স্বশরীরে স্বর্গক চলিয়ো মহামতি॥ ৪৫২
- বাসব বদতি শুনা হরিশ্চন্দ্র রাই।
- মোর বরে তোমার নির্ম্মল ভৈল কাই॥
- আগ বাঢ়াইবাক আসিয়াছো দেববর্গ।
- ভার্য্যা পুত্র সমন্বিতে চলিয়োক স্বর্গ॥ ৪৫৩
- আউর পৃথিবীত থাকিবার নাহি যোগ্য।
- দেবগণ সহিতে ভুঞ্জিয়ো দেব ভোগ্য॥
- মনুষ্য দুর্ল্লভ দিব্য বিমানত চড়ি।
- বিলম্ব নকরি শীঘ্রে স্বর্গে যাহা লরি॥ ৪৫৪
- শুনি নৃপতির মনে আনন্দ মিলিল।
- এড়াইলন্ত ক্লেশ যেন নিদ্রার জাগিল॥
- ভার্য্যার সহিতে রঙ্গ ছালিলন্ত গাব।
- ধর্ম্ম ইন্দ্র দুইহন্তরো নমিলন্ত পাব॥ ৪৫৫
- কর যোর করিয়া বোলন্ত নৃপবর।
- হৃদয়র কথা শুনা ধর্ম্ম পুরন্দর॥
- ভার্য্যাক বিকিলো মই ব্রাহ্মণর ঘরে।
- আপুনিয়ো দাস মই ভৈলো চাণ্ডালরে॥ ৪৫৬
- যাবদেকে তাসম্বার নপাওঁ অনুমতি।
- কেনমতে আমার হৈবেক সদগতি॥
- ধর্ম্মে বুলিলন্ত রাজা জানা নিষ্টকরি।
- মই সে আছিলো চাণ্ডালর রূপ ধরি॥ ৪৫৭
- পূর্ব্ব জনমর ধর্ম্ম লিখিত কপাল।
- তোমার হুইবেক লাগে অবশ্য চাণ্ডাল॥
- মায়ায়ে ভুঞ্জাইলো সিটো কর্ম্ম ভৈল ক্ষয়।
- নকরিবা রাজা কষ্ট এরিয়ো সংশয়॥ ৪৫৮
- বাসবে বোলন্ত মই আছিলো ব্রাহ্মণ।
- ভার্য্যা পুত্র তোমার কিনিয়া দিলো ধন॥
- পরীক্ষিলো আপুনি যতেক তপধর্ম্ম।
- এরিয়োক চিন্তা রাজা নকরিয়ো মর্ম্ম॥ ৪৫৯
- শুনি নৃপতির ভৈলা হরিষ অশেষ।
- মায়া জানি গুছিল মনর যত ক্লেশ॥
- ইন্দ্রক বোলন্ত শুনিয়োক দেবরাজ।
- আরু এক গোটা মোর আছে মুখ্য কাজ॥ ৪৬০
- অযোধ্যার প্রজা মোর যেন পু্ত্র ভাই।
- মই এরিলতে সবে মৃতক পরাই॥
- তাসম্বাক চাহিবে মোহোর মন আছে।
- প্রবোধিয়া প্রজাক স্বর্গক যাইবো পাছে॥ ৪৬১
- মই সিটো লোকর সম্যকে জীব প্রাণ।
- তাত পরে মোহোর বান্ধব নাহি আন॥
- তাসম্বাক নেদেখি স্বর্গত হৈবে দুখ।
- দিয়ো অনুমতি মই দেখো প্রজা মুখ॥ ৪৬২
- বাসবে বোলন্ত এহি হোক নৃপবর।
- বিমানত চড়ি যায়ো অযোধ্যা নগর॥
- আপোন ইচ্ছায়ে করা প্রজাক আশ্বাস।
- পাছে মহা রঙ্গে চলা দেবর নিবাস॥ ৪৬৩
- হেন শুনি নৃপতির হরিষ মনত।
- ভার্য্যা পুত্র সমে আরোহিলা বিমানত॥
- নানাবিধ দেব বাদ্য বাজে আগে পাছে।
- গন্ধর্ব্বে যোগায় গীত অপেস্বরা নাচে॥ ৪৬৪
- বাবে বিদ্যাধরগণে আগত মৃদঙ্গ।
- পুষ্প বরিষয় সিদ্ধগণে করে রঙ্গ॥
- বামে শৈব্যা পটেশ্বরী কোলাত কুমর।
- চলি গৈলা হরিশ্চন্দ্র দুতি পুরন্দর॥ ৪৬৫
- চড়ি বিমানত আতি ছানিয়া আকাশ।
- দ্বিতীয় আদিত্য যেন করয় প্রকাশ॥
- দশোদিশ উঠিয়া দুন্দুভি বাদ্য বাজে।
- উর্দ্ধ দৃষ্টি সচকিত চাবে সমরাজে॥ ৪৬৬
- ক্ষণেক পাইলন্ত গৈয়া অযোধ্যা নগরী।
- স্তম্ভিলা বিমান পাছে আকাশ আবরি॥
- নানাবিধ দেব বাদ্য শবদ তুম্বুল।
- দেখিয়া লোকর ভৈলা মনত আকুল॥ ৪৬৭
- উর্দ্ধ দৃষ্টি সচকিতে চাবে সবে প্রজা।
- দেখে বিমানত আছে হরিশ্চন্দ্র রাজা॥
- কোলাত কুমর বামে শৈব্যা পটেশ্বরী।
- শতগুণে জ্বলৈ কান্তি পূর্ব্বাধিক করি॥ ৪৬৮
- রাজাক দেখিয়া ভৈলা হরিষ প্রজার।
- শুভশুভ বুলি সবে দিলেক জোকার॥
- লবড়া লবড়ি রঙ্গে করে হুলাহুলি।
- নারীগণে জুমে জুমে পারয় উরুলি॥ ৪৬৯
- আবেসে আমার সবে খণ্ডিল ললাট॥
- এহি বুলি প্রজা সবে ছানি আসে বাট॥
- রাজাক দেখিতে সবে ব্যাকুল স্বভাব।
- দেখি নৃপতিয়ো নামি ভৈলা ভূমি পাব॥ ৪৭০
- যেন পিতা পুত্রে কতো কালে এক ঠাই।
- গুছিল বিয়োগ আনন্দর সীমা নাই॥
- সিঞ্চে দুর্ব্বাক্ষত সবে রাজাক আবরি।
- হরিষতে কান্দে কতো হাতে পাবে ধরি॥ ৪৭১
- আজিসে আমার ভৈল মানস উদ্ধার।
- আজি সুপ্রসন্ন ভৈল বিধাতা আমার॥
- আজিসে জানিলো বজ্র গুছাইলন্ত বিধি।
- দুনাই হাত মেলি পাইলো হারাইবার নিধি॥ ৪৭২
- বার্ত্তাকো নপাইলো প্রভু গৈলা কোন ঠান।
- তোমাক নেদেখি যেন ফুটিযাই প্রাণ॥
- আজিসে জুরাইলো হিয়া বোলে প্রজাগণে।
- তোমার কমল মুখ পিয়োহো নয়নে॥ ৪৭৩
- হেন দেখি নৃপতির পালটিল মন।
- কোন মতে এবে এরি যাইবো প্রজাগণ॥
- মনে বিমরিষি হরিশ্চন্দ্র নৃপবর।
- করযোড়ে বাসবক দিলন্ত উত্তর॥ ৪৭৪
- দেবরাজ তোমাক করোহো নমস্কার।
- হাত যোড়ে বোলো শুনা বচন আমার॥
- অযোধ্যার লোকর আমিসে সবে প্রাণ।
- মোক বিনা স্বপনতো নিচিন্তয় আন॥ ৪৭৫
- দেবতো পিতৃত করি আমাত ভকতি।
- তাসম্বাক এড়িবাক নাহিকে শকতি॥
- স্বর্গে যদি যাওঁ মই পাইবে উপতাপ।
- ভকতক পরিত্যাগ হোবে মহাপাপ॥ ৪৭৬
- গুরুবধ ব্রহ্মবধ যিবা জনে করে।
- গরু মারে ব্রাহ্মণর সুবর্ণক হরে॥
- গুরু পত্নী হরে আরু করে সুরাপান।
- ভকতক ত্যাগে নোহে তত্তূল্য সমান॥ ৪৭৭
- পরম ভক্তক যিটো এরে দুরাচার।
- ইহ পরলোকে দুখ নুগুছে তাহার॥
- হেন জানি কিঞ্চিতেকে নেরিবো প্রজাক।
- যায়োক স্বর্গক ইন্দ্র এরিয়ো আমাক।
- মোহোর নগত যেবে যাইবে প্রজাবর্গ।
- দেবরাজ তেবেসে জানিবা যাইবো স্বর্গ॥
- প্রজার লগত নরকত হৌক বাস।
- প্রজাক এরিবে মোর নাহি অভিলাষ॥ ৪৭৯
- বাসবে বোলন্ত শুনিয়োক মহারাজা।
- ভিন্নে ভিন্নে পাপ পুণ্য করিয়াছে প্রজা॥
- একেলগে কিমতে করিবা উপভোগ্য।
- কেন মতে বোলা তুমি বচন অযোগ্য॥ ৪৮০
- তুমি করিয়াছা মহাযজ্ঞ রাজসূয়।
- চিরকালে স্বর্গত থাকিবা দেব হুই॥
- আপোনার কর্ম্মকেসে ভুঞ্জিবাক পাই।
- কোন মতে প্রজাসমে হুইবা একঠাই॥ ৪৮১
- হরিশ্চন্দ্র বদতি শুনিয়ো দেবরাই।
- যেনমত আমার আছয় অভিপ্রাই॥
- যততে সিজিল কর্ম্ম প্রজারেসে বলে।
- প্রজা যেবে নাহি কিবা করিবো একলে॥ ৪৮২
- হেন প্রজাগণ এরি যাইবো স্বর্গ লোভে।
- প্রজায় সহিতে মোক নরকত শোভে॥
- যাহার নিমিত্তে মই বোলাওঁ মহারাজ।
- হেন প্রজা এরি স্বর্গত নাহি কাজ॥ ৪৮৩
- একবাক্য বোলো ইন্দ্র হোবা সাবধান।
- মোর আশা সব প্রজা আছে যতমান॥
- যেবে মহাযজ্ঞ মোর ভৈল স্বরূপত।
- যিবা পূণ্যে চিরকাল থাকিবো স্বর্গত॥ ৪৮৪
- প্রজার নিমিত্তে মই করিলো উৎসর্গ।
- মোর পুণ্যে প্রজার সহিতে যাইবো স্বর্গ॥
- ইন্দ্রক শুনায়া রাজা বুলি এহি বাণী।
- তিল কুশ আনি উৎসর্গিয়া দিলা পানী॥ ৪৮৫
- পুরাণ কাহিনী শুনা সভাসদ যত।
- বৈষ্ণবর দেখা কেন কৃপার মহত্ত্ব॥
- আপোনার পুণ্য দিয়া প্রজাক পালয়।
- তপজপ যজ্ঞ দান যতেত আছয়॥ ৪৮৬
- জগতর পুণ্যমানে জানা নিস্ত করি।
- প্রাণী উপকারর অল্পকো নুহি সরি॥
- হেন জানি প্রাণীক অভয় দিয়া দান।
- বোলা হরি হরি পাইবা বৈকুণ্ঠত থান॥ ৪৮৭
- দুলড়ী
- এতেক বচন শুনিয়া রাজার
- আছিল যতেক পুণ্য।
- উৎসর্গি দিবার ফলে তেতিক্ষণে
- ভৈলা সহস্রেক গুণ॥
- ধর্ম্ম ইন্দ্রদেবে ধন্য ধন্য বুলি
- পুষ্প বরিষিয়া মাথে।
- আকাশ চানিয়া দুন্দুভি সম্বাদ
- করন্ত দেবর নাথে॥ ৪৮৮
- বাবে বিদ্যাধরে গন্ধর্ব্বে গাবয়
- অপেস্বরা গণে নাচে।
- সিদ্ধ মুনি সবে প্রশংসা করন্ত
- আনো যত দেব আছে॥
- সেহি বেলা ইন্দ্রে দূত পঠাইলন্ত
- গৈলা আম্রাবতী থান।
- স্বর্গ হন্তে আসি ভূমিতে নামিলা
- অসংখ্য কোটি বিমান॥ ৪৮৯
- স্বর্গক ছারিয়া নামিলা ভূমিত
- যেন সূর্য্য অসংখ্যাত।
- অমৃত সমান যত উপভোগ
- বাঞ্চিলে মিলয় তাত॥
- সুবর্ণ কিঙ্কিনী বাজে রিনি জিনি
- দিব্য রত্নে পারে জিকি।
- জল স্থল যুরি রহিলা বিমান
- অযোধ্যা নগর ঢাকি॥ ৪৯০
- বাসবে বোলন্ত ধন্য হরিশ্চন্দ্র
- সূর্য্যবংশী মহারাই।
- যেহি মনবাঞ্চা সেহি সিদ্ধি ভৈল
- আরু আছা কিবা চাই॥
- যাক মন আবে তাক লোবা লাগে
- বিমানে চরোক আসি।
- সৃষ্টি থাকে মানে রহিলে তোমার
- ইটো মহা যশ রাশি॥ ৪৯১
- এতেকে বচন শুনি নৃপতির
- হরিষ ভৈলা অশেষ।
- সমস্ত প্রাণীক আপুনি মাতিয়া
- করিলা রাজা আদেশ॥
- অযোধ্যা নগরে যত লোক আছে
- সবে বিমানত চরা।
- স্বপুত্র বান্ধবে স্বর্গক লাগিয়া
- আমার লগতে লরা॥ ৪৯২
- যত গজ বাজী মহিষ মেথন
- গর্দ্দভ ছাগল গরু।
- কুকুর বিড়াল হংস পার জন্তু
- যত তৃণ বন তরু॥
- পতঙ্গ পর্য্যন্তে যত জীব জন্তু
- মোর অযোধ্যাত আছে।
- বিমানে চরিয়া আগতে চলোক
- মই চলি যাবো পাছে॥ ৪৯৩
- রাজার বচন শুনিয়া লোকর
- আনন্দর নাহি পার।
- স্বর্গক যাইবার লাগি উসমিস
- ভৈলক সবে প্রজার॥
- লবড়া লবরি বিঙ্গারাব করি
- সবে ভৈলে এক ঠাই।
- আথেবেথে দিব্য বিমানক বাছি
- লবৈ ভাল ভাল চাই॥ ৪৯৪
- আপোন গৃহর দুবারক লাগি
- লৈযান্ত আপুনি ধরি।
- আছে মানে সবে সর্ব্বস্ব তোলয়
- ছাগ গরু আদি করি॥
- সবান্ধবে পাছে বিমানত চড়ি
- পিন্ধে দিব্য অলঙ্কার।
- বেদাঙ্গ বসন গাবত পিন্ধয়
- গন্ধে পুষ্পে জাতিস্কার॥ ৪৯৫
- দিব্য রত্নময় আসনে উঠিয়া
- বসয় ইচ্ছা সুখদে।
- দিব্য মালা যত পরিধান করে
- যোগাবে পঞ্চ শবদে॥
- যত দেব ভোগ ভুঞ্জে সবান্ধবে
- মিলিল কর্ম্মর ভোগ।
- বিমানত চড়ি আকাশর পথে
- নৃপতির লবে লাগ॥ ৪৯৬
- এহি মতে প্রজা গণে বিয়াপিল
- অন্য অন্য রঙ্গে হাসি।
- যত জীব জন্তু বিমানে চড়িয়া
- পিপরা পর্য্যন্তে আসি॥
- সবাকো নৃপতি লগত লৈযান্ত
- যত বৃক্ষ লতা বন।
- ভূমিক এড়িয়া সবে আলগিল
- অযোধ্যা ভৈল উচ্ছন॥ ৪৯৭
- সবারো মাজত জ্বলন্ত নৃপতি
- দিব্য বিমানত বসি।
- তাহার মধ্যত প্রকাশ ভৈলন্ত
- যেন পূর্ণিমার শশী॥
- মনুষ্যর চেষ্টা গুছিল সবারো
- দেবর যেন স্বভাব॥
- জগতে আশ্চর্য্য ভৈল নৃপতির
- দেখিয়া পুণ্য স্বভাব॥ ৪৯৮
- ইন্দ্রর আদেশে চড়িয়া বিমানে
- গগণ মণ্ডল ঢাকি।
- অসংখ্যাত কোটি কিঙ্কিনী বাজয়
- দুন্দুভি শব্দ জাকি॥
- আনো নানা বিধ বাবে দেবে বাদ্য
- করে মহানৃত্য গীত।
- দেবতার শ্রীক লভিয়া প্রজার
- আনন্দে নধরে চিত॥ ৪৯৯
- সবারো মাজত উজ্জ্বল বিমান
- কৈলাশ সম মন্দিরে।
- দিব্য সিংহাসনে বসিয়া নৃপতি
- চলি যান্ত ধীরে ধীরে॥
- ইন্দ্রর যতেক পরিষদ আছৈ
- মিলিল রাজাত আসি।
- আনন্দিত চিত্তে ভার্য্যার সহিতে
- ক্রীড়া কৌতূহলে হাসি॥ ৫০০
- নানা বীনা বেনু মৃদঙ্গ বজাবে
- গন্ধর্ব্বে গাবয় গীত।
- মুখ্য মুখ্য অপে স্বরা গণে কাছি
- আগত করয় নৃত্য॥
- কতো যোগাবয় কর্পূর তাম্বুল
- কতো যান্তে হাত ভরি।
- কতো দুইপাশে চামরে ঢুলয়
- মাথো শ্বেতছত্র ধরি॥ ৫০১
- অমৃত প্রভৃতি যত দেব ভোগ
- আগেতে যোগায় আনি।
- সিদ্ধ মুনি গণে উপাসি যাহান্তে
- বোলন্ত প্রশংসা বাণী॥
- হেন মহারাজা নভৈল নুহিব
- আউর পৃথিবীর মাজে।
- ধন্য ধন্য মহা রাজা হরিশ্চন্দ্র
- প্রশংসে জ্ঞানী সমাজে॥ ৫০২
- এহিমতে রাজ্য আনন্দে উৎসব
- পাইলন্ত স্বর্গর কোল।
- নৃপতিক দেখি স্বর্গবাসী লোক
- করে জয় হরি বোল॥
- সাধু সাধু হরি শ্চন্দ্র নৃপবর
- জগত ব্যাপিল যশে।
- যাবে চন্দ্র সূর্য্য থাকিল খিয়াতি
- প্রশংসে বেঢ়ি ত্রিদশে॥ ৫০৩
- হরিশ্চন্দ্র রাজা মহা পুণ্য বলে
- প্রজাক নিলে উদ্ধারি।
- মগর আকার করিয়া বিমান
- থাপিলন্ত সারি সারি॥
- যাক যেন যোগ্য বসাইল স্বর্গত
- রৈলা কতো দূর যুরি।
- অদ্যাপি স্বর্গত দেখিয়া প্রত্যক
- নামে হরিশ্চন্দ্র পুরী॥ ৫০৪
- সবারো মাজত যেন মেরুগিরি
- রাজার বিমান জলৈ।
- ইন্দ্রতো অধিক ভৈলন্ত শ্রীমন্ত
- প্রতাপে সূর্য্যতো বলৈ॥
- পুণ্যর প্রভাবে যতেক ত্রিদশে
- উপহাসে রাজাক আসি।
- এহিমতে হরি শ্চন্দ্র থাকি গৈল
- সমস্ত স্বর্গ প্রকাশি॥ ৫০৫
- রাজার পুণ্যর সমৃদ্ধি দেখিয়া
- শুক্রে বুলিলন্ত গুণি।
- হেন ক্ষমাধর্থ দানর মহত্ত্ব
- নতু দেখি নতু শুনি॥
- রাজার লগত সমস্ত অযোধ্যা
- আসি পাইলা স্বর্গস্থান।
- ধর্ম্মর প্রভাবে হরিশ্চন্দ্র পুরী
- ভৈগৈল স্বর্গ সমান॥ ৫০৬
- নমো হরি পদ পঙ্কজ যুগল
- যাগ যোগী করে ধ্যান।
- শঙ্কর বদতি ভৈল সমাপতি
- হরিশ্চন্দ্র উপাখ্যান॥
- কৃষ্ণর চরণ সংসার তরুণ
- প্রণামো সহস্র বার।
- কৃষ্ণর কিঙ্করে ভণিলা শঙ্করে
- দুলরী ছবি পয়ার॥ ৫০৭
- শুনা সর্ব্বজন করি এক মন
- মাধবত দিয়া মতি।
- হরি বিনে আন মায়া ময় জানি
- করিয়ো হরি ভকতি॥
- ইটো কলিযুগ নাহি আন মতি
- বিনে মাধবর নাম
- হেলা পরিহরি পুরুষ উদ্ধারি
- ডাকি বোলা রাম রাম॥ ৫০৮
- ধর্ম্ম পক্ষিগণে বোলে শুনিয়ো জৈমুনি ঋষি
- ॥। সমাপ্ত॥।
</poem>
|} |}